রোববার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

নির্বাক হয়ে গেছেন মাগুরার সেই শিশুর বড় বোন

মাজহারুল হক লিপু, মাগুরা
প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৭:১৩ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
মাগুরার সেই শিশু’র বড় বোন বাঁয়ে

মাগুরার সেই শিশু’র বড় বোনের বিয়ে হয়েছিল মাত্র চার মাস আগে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে গিয়েছিল সে শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু নিমিষেই সব স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হল তার এবং তার পরিবারের। স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি সবাই এখন জেলে। ছোট বোন আজ মারা গেছে। 

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানানো যাচ্ছে, মাগুরায় নির্যাতনের শিকার শিশুটি আজ (বৃহস্পতিবার) বেলা একটায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছে। সিএমএইচের সর্বাধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শিশুটির আজ সকালে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। দুবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃৎস্পন্দন ফিরে আসেনি।


বিজ্ঞাপন


মাগুরার শ্রীপুর উপজেলাধীন জারিয়া গ্রামে সেই শিশু’র বাড়ি গিয়ে দেখা গেল শুনশান নিরবতা। শিশুটির বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন। মুরুব্বিদের কেউ নেই বাড়িতে। সেই শিশু’র বড় বোন নির্বাক বিছানায় শুয়ে আছে। তাকে দেখভাল করতে ছুটে এলেন দুই খালা। খালারা তাকে ধরে নিয়ে বসালেন বারান্দায়। নির্বাক বোনের মুখ দিয়ে বের হলো না একটি কথাও।

সেই শিশু’র খালা রোকসানা খাতুন বলেন, তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সেই শিশুটি ছিল সবার ছোট। তাই সবারই খুব প্রিয় ছিল। পড়াশোনাও ভালো ছিলো। বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়েই তার এই দুর্ঘটনা।

আসিয়ার অপর খালা লাকি খাতুন বলেন, যারা এ ধরনের কাজ করে তাদেরকে সবার সামনে মেরে ফেলা উচিত। প্রতিবেশী রাবেয়া জানায়, শিশুটি জারিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী । পড়াশোনায় সে খুব ভালো ছিলো।  আমরা চাই দোষীদের ফাঁসি হোক।

শিশুটির চাচা ইব্রাহিম শেখ বলেন,  মাত্র কয়েক মাস আগে আমার ভাস্তির বিয়ে দিলাম।  শ্বশুর বাড়ি থেকে এমন ঘটনা ঘটবে কল্পনাতেও ভাবিনি। আমার ভাস্তি চুপ হয়ে গেছে। এদের সবার যেন ফাঁসি হয়।


বিজ্ঞাপন


পরিবারের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) মাগুরা শহরতলীর বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়। প্রথমে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলেও অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে ঢাকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। পরে শুক্রবার রাতে তাকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় আসিয়ার বোনের স্বামী, শ্বশুরসহ চারজনকে গ্রেফতার করে রিম্যান্ডে নেওয়া হয়েছে।

মাগুরার এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনা চলছে। ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। 

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর