লক্ষ্মীপুরে খাবার হোটেলে আহার করার সময় রোজাহীন কয়েকজনকে বের করে রাস্তায় প্রকাশ্যে কান ধরে উঠবস করানো বণিক সমিতির সেই নেতা দুইজনকে জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছেন।
বুধবার (১২ মার্চ) রাতে জেলা পুলিশের হস্তক্ষেপে সদর থানা এলাকায় এক ভিডিও বার্তায় ভুক্তভোগী দুইজনকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমা চান লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল আজিজ। তবে যাদের কান ধরে ওঠবসের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তাদের দেখা যায়নি ক্ষমার ছাড়ার ভিডিওতে।
বিজ্ঞাপন
সাংবাদিকদের দেওয়া ভিডিও বার্তায় দেখা যায়, আজিজ ভুক্তভোগী মুনছুরুল হক ও মো. সাজু নামে দুইজনকে জড়িয়ে ধরেন এবং ক্ষমা চান।
ভিডিও বার্তায় আব্দুল আজিজ বলেন, কয়েকজন হোটেলে খাবার খাওয়ার জন্য ঢুকেছেন। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তাৎক্ষণিক আমি গিয়ে উনাদেরকে বলেছি আপনারা কেন খাচ্ছেন। আপনারাতো মুসলমান। সেক্ষেত্রে তারা বলেছে রোজা রাখেনি। আমি বলেছি আপনারা রোজা রাখিয়েন। আমি আসলে যে কাজটি করেছি, এটি অন্যায়, অপরাধ। সেজন্য এটা আমার করা ঠিক হয়নি। এজন্য আমি উনাদের কাছে ক্ষমা চাই। উনারা যেন আমাকে ক্ষমা করে দেয়। আমি এ ধরনের পুনরাবৃত্তি আর কখনো করবো না। এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত হবো না।
এর আগে, দুপুরে রোজার পবিত্রতা রক্ষায় শহরের থানা রোড এলাকায় হিন্দুদের কয়েকটি পর্দা লাগানো খাবার হোটেলে লাঠি হাতে বণিক সমিতি নেতা আজিজ অভিযান চালায়। এসময় রোজাহীন কয়েকজন যুবক-বৃদ্ধকে হোটেল থেকে বের করে রাস্তায় প্রকাশ্যে তিনি কানে ধরে উঠবস করতে বাধ্য করেন। ঘটনাটির কয়েক টুকরো ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় নানান সমালোচনা ও নিন্দার ঝড়। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ ঘটনায় সংবাদ পরিবেশন করা হয়। এতে রাতে সদর থানা পুলিশ তাকে আটক করে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে ভুক্তভোগী মুনছুরুল হক ও মো. সাজু জানায়, তারা রোজা রাখেনি। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় বণিক সমিতি নেতা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছেন। এখন তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। এখন আর তাদের মনে কষ্ট নেই। তারা আইনগত ব্যবস্থাও নেবেন না। আইনগত ব্যবস্থায় না যাওয়া নিয়ে কারো তারা দ্বারা প্ররোচিত হননি বা জোর করেননি।
বিজ্ঞাপন
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার প্রেক্ষিতে আজিজকে থানায় ডেকে আনা হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী দুইজনকে আমরা থানায় এনেছি। কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেয়নি। এছাড়া আজিজ নিজেও ক্ষমা চেয়েছেন। এজন্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী লাল দাঁড়িওয়ালাকে আমরা খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। শুধু লাল দাঁড়িওয়ালা না, ভুক্তভোগী অন্য কেউ এসেও যদি অভিযোগ দেয় আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
প্রতিনিধি/টিবি