সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

আলু তোলার আগেই হিমাগারের বুকিং স্লিপ শেষ

জেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:০৮ পিএম

শেয়ার করুন:

আলু তোলার আগেই হিমাগারের বুকিং স্লিপ শেষ

গত মৌসুমে আলুর দাম ভালোই পেয়েছেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের কৃষক নয়ন সাহা। আর তাই এবার আরও দুই বিঘা বেশি জমিতে আলু আবাদ করেছেন তিনি। কয়েক দিনের মধ্যেই খেত থেকে সেই আলু তোলার উপযোগী হয়ে আসছে। কিন্তু বাজারে এখন দাম কম থাকায় খেতের আলু হিমাগারে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তাই আগাম স্লিপের আশায় একের পর এক হিমাগারে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিন্তু কোথাও স্লিপ পাননি। উপায়ন্তর না দেখে আলু সংরক্ষণের বিষয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছেন নয়ন। এই কৃষকের দাবি, হিমাগার কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে মজুতকারীরা আলু সংরক্ষণের স্লিপ আগেভাগেই হাতিয়ে নিয়েছেন। ফলে সাধারণ চাষিরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগের সূত্র মতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আলুর আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৩১৮ হেক্টর জমিতে। আর এ থেকে পাওয়া যাবে দুই লাখ চার হাজার ৯৯৬ টন আলু। অন্যদিকে আলু সংরক্ষণের জন্য উপজেলায় চারটি হিমাগার রয়েছে। এসব হিমাগারের ৩৬ হাজার ৫০০ টন আলু সংরক্ষণ করা যায়। ফলে চাষিদের উৎপাদিত অধিকাংশ আলুই থেকে যাচ্ছে সংরক্ষণের বাইরে। সংরক্ষণের সুযোগ না পেয়ে কৃষক তাদের খেতের আলু বাজারে বিক্রি করে দেন। আর এতেই বাজারে আলুর দাম আরও কমে যাবে।


বিজ্ঞাপন


হিমাগারে আলু রাখার জন্য এবার লুজ বুকিংয়ের রেট হচ্ছে ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা আলু ৪০০ টাকা (প্রতি কেজি আলুর জন্য ৮ টাকা)। আলু সংরক্ষণ করতে হিমাগার কর্তৃপক্ষ আগাম স্লিপ বিতরণ করে। এসব স্লিপ নিতে প্রতি বস্তা আলুর বিপরীতে কৃষককে ৫০ টাকা আগাম গুনতে হচ্ছে।

উপজেলার বকচরে গোবিন্দগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজ-১, মদনপুরে এপেক্স এগ্রিসায়েন্স লিমিটেড, সূর্যগাড়িতে গোবিন্দগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজ-২ ও বকচরে হিমাদ্রী লিমিটেডে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলু সংরক্ষণের স্লিপ সংগ্রহ করতে একের পর এক কৃষকেরা আসছেন। কিন্তু স্লিপ না পেয়ে তারা ফিরে যাচ্ছেন। কৃষকদের অভিযোগ, প্রকৃত কৃষকেরা আলু সংরক্ষণের স্লিপ সংগ্রহ করতে পারেননি। আর এতে কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত আলু খেত থেকে তোলার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হবেন। তারা আগামী মৌসুমের জন্য বীজ আলুও সংরক্ষণ করতে পারবেন না।

এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারে, সে জন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। কালো বাজারে বুকিং স্লিপ বিক্রি বা কাউকে হস্তান্তর করা যাবে না। কেউ অতিরিক্ত আলু মজুতের কারসাজি করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/ এমইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর