কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সুনীতি শান্তি হলের কক্ষে মাদক গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলের একটি কক্ষ দখলে নিয়ে নিয়মিত মাদক সেবন করেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা৷ এই বিষয়ে প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সুনীতি-শান্তি হলের অর্ধশতাধিক আবাসিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পত্র জমা দেন তারা।
সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. নাহিদা বেগমের এবং গতকাল সুনীতি শান্তি হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোছা. শাহিনুর বেগমের কাছে অভিযোগপত্র দেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, আমরা সুনীতি শান্তি হলের সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ফাইনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাবিনা ঐশী একই বিভাগের লাবিবা ইসলাম, ফার্মেসি বিভাগের আতিফা লিয়া এবং আইন বিভাগের মাইশা রহমান রোদিতা দীর্ঘদিন ধরে হলের ২১৪ নম্বর রুম দখল করে সেখানে মাদক সেবন করছে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আতেফা লিয়ার কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আগে ছাত্রলীগ করতাম তাই আমাদের নিয়ে এসব বলছে। আমি ২১৪ নম্বর আমার বান্ধবী থাকায় যায় মাঝে মধ্যে তবে আমি মাদকের সঙ্গে জড়িত নই।
এছাড়াও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ পত্রে বলেন‚ মাদকের ধোঁয়া ও অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান আশেপাশের রুমের শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠছে। ২১৪ নম্বর রুমে কারও সিট বরাদ্দ হলে তাকে হুমকি দিয়ে অন্য রুমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হলে বসবাসকারী অন্য শিক্ষার্থীদের জন্য এটি এক ধরনের মানসিক চাপে পরিণত হয়েছে, মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের আচার-আচরণ অনেক সময় আক্রমণাত্মক ও সহিংস হয়ে ওঠে যা অন্য শিক্ষার্থীদের আতঙ্কিত করছে।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হলের ২১৪ নম্বর কক্ষে দু’জন শিক্ষার্থীকে সিট বরাদ্দ দেন প্রাধ্যক্ষ। তবে মাদক সেবনের দায়ে অভিযুক্ত ও ২১৩ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা লাবিবা ইসলাম ও ২১৪ কক্ষের বাসিন্দা রাবিনা ঐশী তাদের রুম ছাড়তে হুমকি দেন। একজন রুম ছেড়ে দিলে লাবিবা ২১৩ নম্বর থেকে ২১৪ নম্বর কক্ষে ভুক্তভোগীর সিটে উঠেন।
হুমকির বিষয়ে অভিযুক্ত রাবিনা ঐশী বলেন, আমার বান্ধবী লাবিবা সেমিস্টার ফাইনালের কারণে আমার রুমে উঠেছে। মিউচুয়ালি তারা রুম শিফট করেছে।
তবে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলেন, আমি এখন কিছু বলতে চাচ্ছি না। প্রভোস্ট ম্যামকে সব বলেছি আপনি ওনার সঙ্গে কথা বলুন।
এসব বিষয়ে সুনীতি শান্তি হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোছা. শাহিনুর বেগম বলেন, এসব বিষয়ে আমি অবগত। তাই বিকেল ৫টায় এই বিষয়ে আমরা প্রশাসনিকভাবে মিটিং করব। মিটিংয়ের পর সিদ্ধান্ত জানিয়ে আমি বক্তব্য দেব।
অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে, মাদকাসক্ত ছাত্রীদের হল থেকে বহিষ্কার করা, মাদক সেবনে জড়িতদের চিহ্নিত করে ডোপ টেস্ট করিয়ে যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, হলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং বহিরাগতদের প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার দাবি জানান।
প্রতিনিধি/এসএস

