খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের আদেশ বহাল থাকবে এবং গতকাল সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৮তম জরুরি সভা অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদ সভাপতিত্ব করেন। সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে, ৮ আগস্ট ২০২৪-এ ঘোষিত রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকবে, যার মানে হল যে শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে কোনো ধরণের সম্পর্ক রাখা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে এবং কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে।
এছাড়া, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৩ এর ধারা ৪৪(৫) অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে তদন্তের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান অনুযায়ী চাকরিচ্যুতির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে আজীবন বহিষ্কার এবং ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
গতকাল সংঘর্ষে জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে এবং সরাসরি জড়িত শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার করা হবে। সত্যিকার দোষী শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে তদন্তের জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
কমিটির সভাপতি হিসেবে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. এম. এম. এ. হাসেম, সদস্য হিসেবে শহীদ স্মৃতি হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. আবু জাকির মোর্শেদ, এবং সদস্য সচিব হিসেবে সহকারী পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) শাহ মুহাম্মদ আজমত উল্লাহ নিয়োগ পেয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের তত্ত্বাবধানে ক্যাম্পাস এবং সংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আহত সকল শিক্ষার্থীর চিকিৎসা ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি’র পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবির প্রতি প্রশাসনের উদাসীনতা দেখে আজ দুপুর ১টার মধ্যে পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন ও বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
এছাড়া, সকালে ছাত্রদল এবং যুবদলের নেতাকর্মীরা খুলনার শিববাড়ি মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে, তারা খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন, যেখানে তারা কুয়েটের সংঘর্ষের ঘটনা এবং উসকানির সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।
এটি ঘটেছে কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রদল এবং বিরোধী ছাত্র আন্দোলনগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের ফলস্বরূপ, যাতে ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
প্রতিনিধি/একেবি

