পটুয়াখালী আইনজীবী সমিতি নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট মো. রুহুল আমিনসহ তিন আইনজীবী আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মনোনয়নপত্র দাখিলকে কেন্দ্র করে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
আহত বাকি দুজন হলেন- পৌর জামায়াতের ৬নং ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মহিউদ্দিন ও জামায়াত কর্মী গাজী মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত রুহুল আমিনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত জামায়াতপন্থি আইনজীবী রুহুল আমিন বলেন, ‘আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। নির্বাচনী তপশিল অনুযায়ী আজ সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ছিল ৯টি পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের শেষ দিন। এতে জামায়াত সমর্থিত জেলা ‘ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৯টি পদে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে মোতাবেক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে গেলে ৬টি পদে মনোনয়নপত্র বিক্রি করে নির্বাচন কমিশন। তবে বাকি তিনটি পদ সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র চাইলে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বাধা দেন। একপর্যায়ে আমাদের ওপর হামলা করে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একাংশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘পটুয়াখালী আইনজীবী সমিতি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। তাই জামায়াত আলাদাভাবে ৯টি পদেই প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট নাজমুল আহসান সভাপতি ও অ্যাডভোকেট মো. মহিউদ্দিন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীসহ ৯টি পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও ও দাখিলের জন্য গেলে তারা এ হামলা চালান।’
জামায়াতপন্থি এ আইনজীবী আরও অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচন কমিশনের প্রধান অ্যাডভোকেট মোহসীন উদ্দিন। তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এবং অন্য দুই নির্বাচন কমিশনও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী। নির্বাচন কমিশনাররা এ সময় নীরব ভূমিকা পালন করেন।’
বিজ্ঞাপন
এ প্রসঙ্গে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শরীফ মো. সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এ অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। এ ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি আইনজীবী সমিতি চত্বরে। বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তারা এসব রটাচ্ছেন।’
এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এটিএম মোজাম্মেল হক তপন বলেন, ‘এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের ছিলেন। এখন জামায়াতের কাঁধে ভর করেছেন। তাই তাকে দেখে আইনজীবীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা দেখা দেয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং জামায়াতের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।’
জেলা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মো. মোহসীন উদ্দিন বলেন, ‘জেলা জামায়াতের আমির নিজে উপস্থিত থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এ ঘটনায় আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দেননি তারা। তিনটি পদে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেনি এমন অভিযোগও সত্য নয়।’