প্রচলিত পদ্ধতি বাদ দিয়ে আধুনিক যন্ত্রনির্ভর রাইস ট্রান্সপ্লান্টার বা ‘সমলয়’ পদ্ধতির মাধ্যমে এবারই প্রথম টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার কৃষকরা ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন। আধুনিক যান্ত্রিকীকরণের ফলে ধানের চারা রোপণ, কর্তনে শ্রমিক ও মজুর সংকট এবং অতিরিক্ত খরচ কমসহ সাশ্রয়ে কৃষকরা লাভবান হবেন বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, এই পদ্ধতিতে আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে সমগভীরতর দূরত্ব এবং অল্প শ্রমে কৃষকরা ধানের চারা রোপণ করতে পারবেন। একদিকে যেমন চারা কম লাগে, অপরদিকে- অল্প সময়ে বেশি জমিতে চারা রোপণ করা যায়। ফলে শ্রমিকের তেমন প্রয়োজন পড়ে না। এতে সময় ও খরচ কম এবং ফলন বাড়বে।
বিজ্ঞাপন
এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপজেলায় সমলয় চাষাবাদে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে রবি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বিরামদী এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে ধানের চারা রোপণ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।
এ সময় উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন- উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. পপি খাতুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভূঞাপুর পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা নাজমুল হাসান মামুন প্রমুখ।
সমলয় পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি ও রোপণের ব্যাপারে কথা হয় বিরামদী এলাকার কৃষক রশিদ মিয়ার সঙ্গে। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, আগে প্রচলিত পদ্ধতিতে ধানের বীজতলা ও রোপণ করেছি। এবারই প্রথম মেশিনের সাহায্যে বীজতলা তৈরি করে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার বা সমলয় পদ্ধতির মাধ্যমে চারা রোপণ করছি। এভাবে কখনো আবাদ করিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলা বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্র ৭ হাজার ১৩০ হেক্টর ধরা হয়েছে। অর্জন হয়েছে ৫ হাজার ১০০ হেক্টর, আরও চলমান রয়েছে। তারমধ্যে এবারই প্রথম সমলয় পদ্বতিতে উপজেলায় ৫০ একর জমিতে ৭৮ জন উপকারভোগী কৃষক ধানের চারা রোপণ করছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, সনাতন বা প্রচলিত পদ্বতিতে এলাকাভেদে বোরো মৌসুমে প্রায় ১৮-২০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে ধান কর্তনে হেক্টর প্রতি সাড়ে ৩-৪ হাজার টাকা খরচ হবে। রোপণ এবং কর্তনে যান্ত্রিকীকরণ করা সম্ভব হলে ধান উৎপাদন খরচ হেক্টর প্রতি প্রায় ২৫-২৮ হাজার টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব।
ইএ