রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

রাশিয়ায় মৃত্যুমুখে যশোরের জাফর, পরিবারের উৎকণ্ঠা

জেলা প্রতিনিধি, যশোর
প্রকাশিত: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৩ পিএম

শেয়ার করুন:

রাশিয়ায় মৃত্যুমুখে যশোরের জাফর, পরিবারের উৎকণ্ঠা
রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যশোরের চাঁচড়া ইউনিয়নের বড় মেঘলা গ্রামের জাফর হোসেন।

যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের বড় মেঘলা গ্রামের জাফর হোসেন। ইচ্ছে ছিল ইউরোপে গিয়ে নিজের ভাগ্য বদল করবেন। সেজন্য এনজিও থেকে ৪ লাখ ও সুদ করে ৩ লাখ এবং সোনার গহনা বন্ধক রেখে মোট ৮ লাখ টাকার বিনিময়ে দেশ ছাড়েন তিনি। কিন্তু বিধিবাম। জাফর হোসেনের আর ইউরোপ যাওয়া হয়নি। এর আগেই দালাল চক্র তাকে রাশিয়ার কাছে বিক্রি করে দেয়। ফলে সে দেশে গিয়ে তাকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে অস্ত্র হাতে নামতে হয়েছে।

জাফর হোসেন যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের বড় মেঘলা গ্রামের খায়রুল সরদারের ছেলে। জাফরের মা হাসিনা খাতুন ও স্ত্রী খাদিজা খাতুন। তার শিশু দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।


বিজ্ঞাপন


জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন জেলায় মানবপাচারের একটি বড় ধরনের ফাঁদ পেতেছে ড্রিম হোম ট্রাভেলস নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান। গ্রাম পর্যায় থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্তরে তাদের একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রায় প্রতিটি পয়েন্টে এই চক্রের সদস্যরা কাজ করছেন।

জাফরের পরিবার জানিয়েছে, রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর থেকে শুরু হয় দালাল চক্রের অত্যাচার। যুদ্ধের প্রশিক্ষণে যেতে না চাইলে দেওয়া হয় হত্যার হুমকি। করা হয় মারধর, দেওয়া হয় না খাবার।

জাফরের মা হাসিনা খাতুন বলেন, গত চার মাস আগে এনজিও থেকে ৪ লাখ ও সুদ করে ৩ লাখ এবং সোনার গহনা বন্ধক রেখে মোট ৮ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে রাশিয়া পাঠানো হয়। দালালের প্রতারণার ফাঁদে পরে সৌদিতে একমাস রাখে, এরপর দুবাই থেকে নতুন দালাল তাকে লিবিয়া নিয়ে যায়। সেখান থেকে রাশিয়ায় সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে যুদ্ধের ময়দানে নামতে হবে বলে ছেলে জানিয়েছে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, এখন আমার ছেলে যুদ্ধের ময়দানে কান্নাকাটি করছে। সে জানিয়েছে, যুদ্ধ করতে গিয়ে বাংলাদেশি একজন মারা গেছে ও একজন গুরুতরভাবে আহত হয়েছে। আমার ছেলে এখন বাংলাদেশে ফিরে আসতে চাইছে। না হলে তার মৃত্যু হবে বলে জানিয়েছে। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানাই সরকারের কাছে।


বিজ্ঞাপন


জাফরের স্ত্রী খাদিজা খাতুন  বলেন, সাইপ্রাস যাওয়ার উদ্দেশে ড্রিম হোম ট্রাভেলসে টাকা জমা দিয়েছিলেন জাফর। কিন্তু বিভিন্ন ছলছাতুরি করে তাকে রাশিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে কাজ দেওয়ার কথা বলে এজেন্সিটি। কিন্তু তাকে এখন যুদ্ধ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। যুদ্ধ না করলে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

প্রতিনিধি/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর