চলতে চলতে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে হঠাৎ বিকল হয়ে পড়ে শিক্ষার্থী বোঝাই বাস। রাস্তার মাঝে থেমে যাওয়ায় সৃষ্টি হয় যানজটের। শিক্ষার্থীরা ধাক্কা দিয়ে একপাশে আনলেও বাস আর স্টার্ট হয় না। পরীক্ষা আর ক্লাসের তাড়াতে কেউ চলে যায় অটোরিকশা, সিএনজি দিয়ে। আবার কেউ দাঁড়িয়ে থাকে পরের বাসের জন্য। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়ায় আনা বিআরটিসি লাল বাসের হরহামেশার চিত্র এটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস সংকট থাকার কারণে ২০১৮ সাল থেকে বিআরটিসির সঙ্গে চুক্তি করে কুবি প্রশাসন। চুক্তি অনুযায়ী কিলোমিটার প্রতি ১২৩.৪৬ টাকা করে প্রদান করা হয়। বর্তমানে বিআরটিসির ৮ বাস রয়েছে। যা প্রতিদিন ৫৬টি ট্রিপ নিয়ে আসা-যাওয়া করে। বাসগুলোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিদিন ভাড়া গুনতে হয় প্রায় ৮০-৯০ হাজার টাকা। মাস শেষে এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৮-২০ লাখ টাকার মতো।
বিজ্ঞাপন
বিআরটিসি বাসের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে শিক্ষার্থীরা পরিবহন পুল, বাস সংক্রান্ত মতামতের প্ল্যাটফর্ম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিনিয়ত অভিযোগ করলেও নীরব প্রশাসন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পরিবহনে ফিটনেসবিহীন, নষ্ট গাড়ি পাঠিয়ে দায়সারাভাবে চুক্তি রক্ষা করছে বিআরটিসি। আর বিআরটিসি এবং কুবি প্রশাসনের উদাসীনতায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ বাড়ছে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, কুবির লাল বাস নিয়ে আমরা আছি এক দুর্গতিতে। কোথায় কখন থেমে যায়, এটার প্রেডিকশন মনে হয় না কেউ করতে পারবে। হুটহাট বাস নষ্ট হওয়ার ফলে রাস্তায় বড়সড় জ্যামের সৃষ্টি হয়। পরের অন্য বাসগুলোও জ্যামের মধ্যে আটকে থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও ভোগান্তি হয়। মূলত বিআরটিসি নষ্ট ও ফিটনেস বিহীন বাস দিয়ে দায়সারা ভাবে কাজ করছে।
বিজ্ঞাপন
আরেক শিক্ষার্থী ফারিহা জাহান বলেন, আমাদের ক্লাস ও পরীক্ষার নির্দিষ্ট সময় থাকে। কিন্তু বিভিন্ন সময় বাসের ত্রুটির কারণে সঠিক সময়ে ক্লাসে উপস্থিত হতে পারি না। আবার নিজের টাকায় ভাড়া দিয়ে চলে যেতে হয়। মূলত প্রশাসনের উদাসীনতাই এর প্রধান কারণ। তাছাড়া, ভাড়ায় চালিত হওয়ার কারণে প্রতি বছর যে পরিমাণ টাকা ব্যয় হচ্ছে তা দিয়ে নতুন দু’টি বাস কেনা সম্ভব।
এ বিষয়ে পরিবহন পুলের সেকশন অফিসার মো. জাহিদুল আলম বলেন, বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ার কারণ বাসের ফিটনেস নয়। প্রতিটি বাসের ফিটনেস চেক করা আছে। যদি কোনো বাস নষ্ট হয়, সে ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে বাস পাঠানো হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা না করে চলে যায়।
এই বিষয়ে বিআরটিসি কুমিল্লা জেলার ম্যানেজার (অপারেশন) মোশাররফ হোসেন ছিদ্দিকী বলেন, ২০২১ সালের পর থেকে ভালো বাস দিয়েছি আমরা। সামনে আরও ভালো মানের বাস দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে আমাদের চেয়ারম্যান। তবে বিভিন্ন সময় টেকনিক্যাল সমস্যা দেখা দেয়। যেহেতু যন্ত্র, চলতে চলতে কদাচিৎ এমন সমস্যা দেখা দিলে কারও কিছু করার থাকে না।
প্রতিনিধি/এসএস