ভাইয়া আপনি কোথা থেকে বলছেন, আমার ভাইয়ের খোঁজ পেয়েছেন? ভাইয়াকে দেখতে ইচ্ছে করছে। মা আমার ভাইয়াকে দেখতে চাইছেন, কোথা থেকে আনবো তাকে? বলেন না আমার ভাইয়ার কোনো খোঁজ পেয়েছেন কিনা। কথাগুলো সীতাকুণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজ শহীদুল ইসলামের ছোট ভাই দিদারুল ইসলামের।
নিখোঁজ শহীদুল ইসলামের খোঁজখবর নিতে সোমবার (৬ জুন) ঢাকা মেইল থেকে ফোন করা হয় দিদারুলকে। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ভেসে এলো বড় ভাইয়ের সন্ধান চাওয়া এক ছোট ভাইয়ের আকুতির শব্দ। জানালেন শহীদুলের খোঁজে পাগলপ্রায় মা বাবার কথা। ছোট্ট সুখের সংসারে দুর্বিষহ যন্ত্রণা নেমে আসার কথা।
বিজ্ঞাপন
সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর দুঃখপ্রকাশ করে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি। বললেন, গত দুই দিন আমার নম্বরে অনেকের ফোন এসেছে। কিন্তু ভাইয়ের খোঁজ পেয়েছে বলে কেউই ফোন করছে না। একটা ফোন আসার পর একটু আশা জন্মায় এই বুঝি ভাইয়ার খোঁজ পাওয়া গেল।
দিদারুল বলেন, মা প্রতি মুহূর্তেই ভাইয়াকে দেখতে চাইছেন। বাবা তো কথা বলার শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছেন। এখন কোথা থেকে এনে দেবো তাকে? পরিবারের কারও নাওয়া-খাওয়া নেই। সবাই ভাইয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। আমি কোথায় পাবো তাকে।
ফোনে কথা বলার সময় দিদারুল প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে যাওয়ার। সঙ্গে যাবেন তার বাবাও। দুপুরেই ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা দিয়ে বাসায় ফিরেছেন তিনি। এখন পর্যন্ত ২২ জনের পরিচয় শনাক্তের পর লাশ হস্তান্তর করা হলেও নেই শহীদুলের খোঁজ। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাসপাতালের বারান্দায় অধীর অপেক্ষার পর গভীর রাতে বাসায় ফিরতে হয় এক রাশ হতাশা নিয়ে।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, শনিবার (৪ জুন) রাত ১১টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ী ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর বিস্ফোরণের ঘটনায় ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। একই সঙ্গে দুই শতাধিক শ্রমিক, পুলিশ, ফায়ার ফাইটার আহত হয়েছেন বলেও জানানো হয়। আহতরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি রয়েছেন। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে।
এইউ