বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

অর্থাভাবে থেমে আছে জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত বাচ্চুর চিকিৎসা

আলমগীর হোসেন, জামালপুর
প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম

শেয়ার করুন:

অর্থাভাবে থেমে আছে জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত বাচ্চুর চিকিৎসা

গত বছরের ১৯ জুলাই সকালে ঢাকার রামপুরা এলাকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ চলছিল। একসময় শুরু হয় পুলিশের গুলিবর্ষণ। বাড়ি ফেরার পথে সেখানে গুলিবিদ্ধ হন তৈরি পোশাক শ্রমিক বাচ্চু মিয়া। গুলিটি তার হাঁটু ভেদ করে চলে যায়। বর্তমানে প্রয়োজনীয় অর্থাভাবে থমকে আছে তার চিকিৎসা।

জানা গেছে, শুরুর দিকে কিছুদিন চিকিৎসা নিলেও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি বাচ্চু মিয়া। অর্থ সংকটের কারণে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারিভাবে তেমন কোনো অনুদানও পাননি তিনি। এ অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে নিদারুণ দুর্দশায় পড়েছেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। আহত হওয়ার আগে তিনি মায়ের সঙ্গে ঢাকার রামপুরায় থাকতেন এবং একটি গার্মেন্টসে কাজ করতেন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে কাজে ফিরতে পারেননি, ফলে মা-ছেলে দুজনকেই মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।

বাচ্চু মিয়া জানান, গত বছরের ১৯ জুলাই সকালে ঢাকার রামপুরা এলাকায় ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সামনে এগোতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে তাদের কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় গার্মেন্টস ছুটি পেয়ে বাড়ি ফেরার পথে আন্দোলনের মধ্যে পড়ে যান তিনি। একপর্যায়ে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালালে একটি গুলি তার বাম হাঁটুতে বিদ্ধ হয়। গুলিটি হাঁটুর ভেতর দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে তার বন্ধুরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু অর্থাভাবে বেশিদিন চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

IMG-20250129-WA0007

বাচ্চু মিয়া জানান, তার মা ঢাকায় গৃহকর্মীর কাজ করে কিছুদিন তার চিকিৎসার খরচ চালান। কিন্তু চিকিৎসার ব্যয় বেশি হওয়ায় এখন সেটাও বন্ধ। হাঁটতে হলে তাকে স্ট্রেচার ও লাঠির সহায়তা নিতে হয়। সরকারের কাছে তার আবেদন, যেন দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়, যাতে তিনি সুস্থ হয়ে পরিবারের হাল ধরতে পারেন।


বিজ্ঞাপন


বাচ্চুর ভাবি কল্পনা আক্তার বলেন, "আমাদের এমনিতেই অভাবের সংসার। কোনোমতে দিন পার করছি। আমাদের পক্ষে বাচ্চুর চিকিৎসা চালানো সম্ভব নয়। সরকার সহযোগিতা না করলে তাকে সুস্থ করা যাবে না।"

বাচ্চুর চাচাতো ভাই বাবুল হাসান বলেন, বাচ্চু মিয়ার মতো অসংখ্য তরুণ দেশের জন্য আত্মত্যাগ করছে। তাদের যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুততার সঙ্গে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, যাতে তিনি সুস্থ হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন।

জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিন্নাত শহীদ পিংকি জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার ও কিছু নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, তিনি আশ্বাস দেন যে প্রশাসন সব সময় বাচ্চুর পাশে থাকবে।

ইএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর