রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সন্তানকে দেখে যেতে পারলেন না পুলিশের গুলিতে নিহত সুজন

জেলা প্রতিনিধি, ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৭ পিএম

শেয়ার করুন:

সন্তানকে দেখে যেতে পারলেন না পুলিশের গুলিতে নিহত সুজন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন কাঁঠালিয়া উপজেলার মো. সুজন খান। তার স্ত্রী জান্নাত বেগমের কোলজুড়ে এলো এক ফুটফুটে পুত্রসন্তান। আগস্ট মাস, জান্নাত বেগম তখন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। স্বামী হারানোর শোকে ওই সময় তিনি বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। দীর্ঘ চার মাস পর ছেলে সন্তানের মুখ দেখে তার মুখে বেদনা ও আনন্দের মিশ্রণ।

শহীদ সুজন খানের বাবা মো. বাবুল খান বলেন, ‘গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে আমার ফুটফুটে নাতির জন্ম হয়েছে। তার নাম রাখা হয়েছে মো. সজল খান।’ কিন্তু হাসপাতালজুড়ে সেই আনন্দ মুহূর্তটি যেন তীব্র বেদনার স্মারক হয়ে ওঠে। এই নবজাতককে কোলে নিয়ে কতই না খুশি হতেন তার বাবা মো. সুজন খান। কিন্তু তিনি আজ আর নেই। চার মাস আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি।


বিজ্ঞাপন


মো. সুজন খানের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলার দক্ষিন চেচঁরী (জমাদ্দার হাট) গ্রামের চেচঁরীরামপুর ইউনিয়নে। বাবা মো. বাবুল খান এবং মা মোসা. দুলিয়া বেগম।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৪ আগস্ট দোকানের মাল ডেলিভারি দিতে যাওয়ার পথে যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ ও বিজিবির নির্বিচার গুলিবর্ষণে গুলিবিদ্ধ হন সুজন। আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে নিলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

শহীদ সুজনের বড় ভাই মো. রুবেল খান বলেন, “কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ঢাকায় নিহত সুজন খান আমার ছোট ভাই। আজও পৃথিবীতে বেঁচে নেই, কিন্তু তার স্মৃতি নিয়ে আমরা বেঁচে আছি। শহীদ সুজন দ্বিতীয়বারের মতো বাবা হয়েছে। মা ও নবজাতক দু’জনই ভালো এবং সুস্থ আছেন।”

পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মো. সুজন খানের মৃত্যুতে এক অমানিশার অন্ধকার নেমে আসে স্ত্রী জান্নাত বেগমের জীবনে। ইসলামপুর কাপড়ের দোকানের কর্মচারী ছিলেন সুজন, কেরানীগঞ্জের শুভাট্টায় একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী মেয়ে নুসরাত জাহান নূরকে নিয়ে বসবাস করতেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


জান্নাত বেগম এক মেয়ে ও সদ্য ভূমিষ্ঠ ছেলেকে নিয়ে বাকি জীবন কারো বোঝা না হয়ে কিছু একটা করে জীবিকা নির্বাহ করতে চান। এ ব্যাপারে সরকারের কাছে তার আবেদন, তাকে যেন একটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়, যাতে তিনি দুই সন্তান নিয়ে সৎভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন। অসহায় এ পরিবারটি সকলের সহযোগিতা কামনা করছে।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর