মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

জ্বীনের বাদশাকে জিম্মি করে ছাত্রদল নেতার মুক্তিপণ দাবি, গ্রেফতার ২

জেলা প্রতিনিধি, ভোলা
প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:২৭ এএম

শেয়ার করুন:

জ্বীনের বাদশাকে জিম্মি করে ছাত্রদল নেতার মুক্তিপণ দাবি, গ্রেফতার ২
গ্রেফতার হওয়া ছাত্রদল নেতা রাজিব।

ভোলার বোরহানউদ্দিনে আকবর আলী নামের জ্বীনের এক বাদশাকে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় উপজেলার ৪ ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভুক্তভোগী।

এ ঘটনায় পুলিশ ২ ছাত্রদল নেতাকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে একজনের নাম মো. মিজানুর রহমান রাজিব। তিনি উপজেলার সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজ শাখার ছাত্রদল সভাপতি। অপরজনের নাম মো. জিহাদ।


বিজ্ঞাপন


এছাড়াও পলাতক অন্য দুই ছাত্রদল নেতা হলেন-মো. তানজিল হোসেন এবং শাকিব খান। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পদবি জানা যায়নি।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে ভোলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একটি মেস থেকে পুলিশ ওই দুই ছাত্রদল নেতাকে আটক করে এবং ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেন।

ভুক্তভোগীর নাম মো. আকবর আলী। তিনি উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. কাশেম জমাদারের ছেলে। পেশায় তিনি অটোরিকশা চালক হলেও তার আড়ালে তিনি জ্বীনের ব্যবসা করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা তাকে জ্বীনের বাদশা নামে চেনে।

ভুক্তভোগী এবং বোরহানউদ্দিন থানা সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে আকবর আলী বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে রাজিবের নেতৃত্বে ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আকবরকে তুলে নিয়ে ভোলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একটি মেসে নিয়ে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করেন।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

কুমিল্লায় কিশোর গ্যাং ‘রতন গ্রুপে’র সদস্য মাইনুদ্দিন গ্রেফতার

খবর পেয়ে আকবর আলীর ভাই তামিম হোসেন বোরহানউদ্দিন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আকবর আলীকে উদ্ধার করে এবং ছাত্রদল নেতা রাজিব ও জিহাদকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, আকবর আলী একজন জ্বীনের বাদশা। সেজন্য ছাত্রদল নেতা মিজানুর রহমান রাজিব তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে মেসে আটকে মুক্তিপণ দাবি করেন। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর পরিবার তাদেরকে কিছু টাকা মুক্তিপণ দিতেও রাজি হন। কিন্তু টাকার সংখ্যা কম হওয়ার কারণে তারা রাজি হননি।

এদিকে, ওই দুই ছাত্রদল নেতাকে আটকের খবরে বোরহানউদ্দিন থানায় অবস্থান নেন বেশকিছু বিএনপির নেতাকর্মী। এরমধ্যে থেকে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতাকর্মী থানায় গিয়ে যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদেরকে ছাড়িয়ে আনেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকার কারণে রাত ১২টার দিকে আটক দুই ছাত্রদল নেতাকে পুলিশ পাহারায় ভোলা সদর থানায় নিয়ে আসা হয়। এরপর ভুক্তভোগী আকবর চারজনের নাম উল্লেখ করে বোরহানউদ্দিন থানায় একটি মামলা করেন।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে ভোলা সদর মডেল থানা থেকে ওই দুই নেতাকে আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেন।

বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিদ্দিকুর রহমান ঢাকা মেইলকে জানান, আসামি আসামিই। তারা কারা, কি তাদের পরিচয়। এসব আমার জানার বিষয় না। গ্রেফতার হওয়া দুই আসামি আকবর আলী নামের একজনকে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করেছিল। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দুই আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বাদী একজন জ্বীনের বাদশা এবং দুই ছাত্রদল নেতাকে আটকের কারণে বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীরা থানার সামনে অবস্থান নিয়েছে। ওসি এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দেননি।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর