শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলায় জোরপূর্বক মাদরাসার জমি দখলের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার সিংগাবরুনা ইউনিয়নের গোবিন্দপুর নিজ বাড়ীতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য রোকনুজ্জামান রাসেল।
বিজ্ঞাপন
লিখিত বক্তব্যে রোকনুজ্জামান রাসেল বলেন, আমার মা আমাদের বাড়ির বিপরীত পাশে ৩৭.৫ শতাংশ জমি ক্রয় করে। পরে সেই জমি থেকে ২০ শতাংশ জমি একটি মাদরাসায় ওয়াক্ফ করে দেন তিনি। পরবর্তীতে এই মাদরাসা আমার বাবা নূরনবী ও চাচা নূরুল হক পরিচালনা করে আসছিল। গত ২ বছর আগে এই মাদরাসায় একটি ইসলামী সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং চাচা নুরুল হক বৃহৎ অঙ্কের টাকার অনুদান সংগ্রহ করেন। মাদরাসা কমিটি যখন এই অনুদানের টাকা তার কাছে দাবি করে তখন নূরুল হক পরামর্শ দেন যে, মাদরাসার ওয়াকফ্কৃত দলিল বাতিল করে তার নিজ নামে দলিল করে দিতে হবে। তাহলে অনুদানের টাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে কোটি টাকা আর্থিক সহযোগিতা আসবে।
পরে এলাকাবাসীর সিদ্ধান্তে আমার মা মাদরাসার ওয়াকফকৃত দলিল বাতিল করার জন্য আদালতে আবেদন করে। এরই মধ্যে আমার চাচা নূরুল হকের নামে প্রতারণার অভিযোগে একটি বেসরকারি টেলিভিশন ও জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়। এই খবরের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে, সে প্রতারণার মাধ্যমে অনেক নিরীহ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এরপর আমরা এই মাদরাসার জমি তার নামে দলিল করে দিতে অনীহা প্রকাশ করলে সে আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে ভয়ভীতি দেখায় এবং আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়।
ঘটনার দিন আমার বাবা ৯৯৯ এ কল করলে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে। এছাড়া আমাদের কেনা জমিসহ মাদরাসার জমি জবরদখলের পায়তারা করে এবং মাদরাসার সাইনবোর্ড ও মাদরাসা ঘর ভাঙচুর করে। মূলত, আমরা এই এলাকার ধর্মীয় শিক্ষার প্রসারে কাজ করতে চাই। কিন্তু সে কোনো দলিল ছাড়া আমাদের জমি জবর দখলের চেষ্টা করছে। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আদালতে ১৪৪ ধারার জন্য আবেদন করি। এবং মহামান্য আদালত তা মঞ্জুর করেন।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে রাসেল আরও বলেন, মামলা দায়েরের পর থেকে আমার চাচা বিভিন্নভাবে আমার পরিবার ও আমাকে মেরে ফেলা ও পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে আসতেছেন। সে স্থানীয় সন্ত্রাসীগোষ্ঠী এবং দুস্কৃতকারীদের নিয়ে প্রতিনিয়ত মহড়া দিচ্ছে। আমরা আমাদের জান ও মালের নিরাপত্তা চাই।
জানতে চাইলে নূরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমি ওই জমি ৪ লাখ টাকায় কিনে নিয়েছি। কিন্তু আমার ভাবি ওই জমি আমার নামে লিখে না দিয়ে মাদরাসার নামে ওয়াকফ করে দিয়েছেন। পরবর্তীতে আদালত ওই ওয়াকফ দলিল বাতিলের আদেশ দিয়েছেন। আমার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। যেহেতু হিলফুল ফুজুল নূরানী ও হাফিজিয়া মাদরাসাটি আমি নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছি, তাই আমার কেনা জমি আমার নামে লিখে দিতে হবে।
এ বিষয়ে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ জানান, এবিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। বিবাদমান পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিনিধি/এসএস