কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আবাসিক হলসমূহে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নীতিমালা ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। তবে ঘোষণা পর দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করেনি প্রশাসন। ফলে হলগুলো মাদক সেবনের নিরাপদ আঁকড়া হয়ে উঠেছে রীতিমত।
কয়েকটি সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, বিজয় ২৪ হল, শহীদ ধরীন্দ্রেনাথ দত্ত হল ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের কয়েকটি কক্ষ আগে থেকে মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত ছিল এবং বর্তমানে বেশ কয়েকটি কক্ষে নিয়মিত মাদক গ্রহণ চলে। রাত হলেই এসব হলের ছাঁদে বসে মাদকের আসর।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া মেয়েদের সুনীতি-শান্তি হলের কয়েকটি কক্ষে মাদক গ্রহণ করার অভিযোগ রয়েছে কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন চত্বর, মুক্তমঞ্চ, শহীদ মিনারে মাদক সেবন করতে দেখা যায়। প্রশাসনের কাছে গোয়েন্দা সংস্থা থেকে মাদক গ্রহণকারীদের পরিচয় জানানো হলেও পরবর্তীতে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি৷ এর আগে, গত ৪ নভেম্বর প্রভোস্ট কমিটি আবাসিক হল সমূহের জন্য ১৭টি নীতিমালা প্রকাশ করে৷ এরমধ্যে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এবিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক এম. এইচ. আবির বলেন, সকল শিক্ষার্থীদের চাওয়া হচ্ছে একটি মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জ্ঞান চর্চার জায়গা। কিন্তু মাদক মূল জায়গা থেকে সরে গিয়ে সন্ত্রাসের দিকে নিয়ে যায়। মাদক নির্মূলের জন্য শুরু থেকেই আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি৷ এছাড়া আমরা প্রশাসনকে ডোপ টেস্ট চালুর কথা বলে আসছি।
এবিষয়ে বিজয় ২৪ হলের প্রভোস্ট প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান খান বলেন, আমি তথ্য অনুযায়ী ছাদে ও রুমগুলোতে বারবার গিয়েছি। একদিন ছাদে গেলে দৌড়ে পালিয়ে গিয়েছে। এছাড়া একটি রুমে গিয়ে বহিরাগত দুইজনকে পেয়েছি। তবে তাদের সঙ্গে কিছু পাইনি।
নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়েছি এক মাসের মত হয়েছে তাই অভিযান চালাতে পারিনি। তবে শিক্ষার্থীদের মাদকাসক্তি বিমুখ করতে হলে বিভিন্ন ইনডোর গেইমসের আয়োজন করেছি। তবে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবো খুব দ্রুত।
বিজ্ঞাপন
সুনীতি-শান্তি হলের প্রভোস্ট ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোসা. শাহীনুর বেগম বলেন, আমরা প্রতি মাসে হলে জেনারেল মিটিং করি এবং এ বিষয়ে তদারকি করি। যদি কেউ মাদক গ্রহণ করে এমন তথ্য আমরা পাই তাহলে তাদের হল থেকে বের করে দেওয়া হবে। আর শিক্ষার্থীদের বলা আছে, যদি তারা এমন কোনো তথ্য পায় তাহলে যেন আমাদের জানায়। আমাদের কাছে একটি তথ্য আছে একটি রুমের দুইটি মেয়ের ব্যাপারে। যদিও আমরা সরাসরি কিছু পাইনি। তবে আমরা তাদের তদারকি করেছি। তাদের দুইজনের পড়াশোনা খুব দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। তখন ঐ রুমে আমরা অন্য কাউকে উঠাবো।
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোস্ট লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, আমরা মাদকদ্রব্য গ্রহণের অভিযোগে দু’জনের হলের সিট ক্যান্সেল করেছি। আমরা প্রায়ই হলের বিভিন্ন ফ্লোরে ভিজিট করি এবং শিক্ষার্থীদের সচেতন করছি। যদি প্রমাণ পাই তাহলে আইনত ব্যবস্থা নিবো।
এবিষয়ে, প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল হাকিম বলেন, আমরা পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি।
প্রতিনিধি/ এজে