জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বেলগড়িয়া গ্রামে ছেলের বউকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে গালিগালাজের জেরে শ্বশুরের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) বেলা আড়াইটার দিকে প্রতিবেশী আহসান নবীর সাথে বাকবিতণ্ডায় জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫) নামে ওই শ্বশুর কোদালের কোপে গুরুতর আহত হন। পরে পা দিয়ে বুকে গুড়িয়ে তাকে হত্যা করা হয়। ঘটনার সময় তার ছেলে সবুজ মিয়া বাবাকে বাঁচাতে আহসান নবীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি মারা যান।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন ধরে আহসান নবী, নিহত জাহাঙ্গীরের ছেলে সবুজ মিয়ার স্ত্রীর সাথে অশালীন আচরণ করছিলেন। এর ফলে শনিবার সকালে বাড়িতে গালিগালাজ শুরু হয়। পরে সকালে মাঠে কাজ করতে যাওয়ার পথে রাস্তায় তাদের সঙ্গে দেখা হলে আহসান নবী আবারো অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এরই প্রতিবাদে জাহাঙ্গীর উত্তেজিত হয়ে তাকে গালিগালাজ করলে, আহসান নবী হাতে থাকা কোদাল দিয়ে জাহাঙ্গীরের পিঠে কোপ মারে। কোপ খেয়ে তিনি মাটিতে পড়ে গেলে, আহসান নবী তাকে পা দিয়ে বুকে গুড়িয়ে দেয়। পরে ছেলে সবুজ মিয়া বাবাকে বাঁচাতে ঘাতকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লেও শেষ পর্যন্ত তার প্রাণ রক্ষা হয়নি।
স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাখরা নামক স্থানে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘাতক আহসান নবীকে গ্রেফতার করে। তাকে চিকিৎসার জন্য কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত জাহাঙ্গীরের ছেলে সবুজ মিয়া বলেন, “আমার স্ত্রীকে কেন্দ্র করে আহসান নবী আমার বাবাকে রাস্তায় গালিগালাজ করছিল। গালিগালাজের একপর্যায়ে আহসান নবী আমার বাবাকে কোদাল দিয়ে কোপ মারে। তখন বাবা মাটিতে পড়ে যায়। এরপর সে আবারও বাবার বুকে পা দিয়ে গুড়ি মারত থাকে। তখন আমি ওকে মারপিট করতে থাকি। আমার চখের সামনে আহসান নবী আমার বাবাকে হত্যা করেছে। আমি বাবা হত্যার বিচার চাই।
বাখড়া গ্রামের আব্দুস সবুর বলেন, জাহাঙ্গীর আসলেই একজন নীরহ মানুষ। ছোট থেকে বড় হয়েছে, কখনও ওর ঝগড়া-বিবাদ দেখিনি। আজ এভাবে ওর মৃত্যু হবে এটা মেনে নিতেও কষ্ট হয়। আমি ঘাতক আসহান নবীর কঠিন শাস্তির দাবী করছি।
হত্যার বিষয় নিশ্চিত করে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জয়পুরহাট ২৫০ শর্য্যার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহসান নবীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে পুলিশি পাহাড়ায় তাকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হত্যার আসল তথ্য উৎঘাটনে পুলিশের একাধীক টিম কাজ করছে।
বিজ্ঞাপন
প্রতিনিধি/একেবি