মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা

বিদেশের নামে প্রতারণা, ২৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৫৯ পিএম

শেয়ার করুন:

বিদেশের নামে প্রতারণা, ২৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
বিদেশের নামে প্রতারণার শিকার পাঁচ যুবক। ছবি: ঢাকা মেইল

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার দিনমজুর পরিবারের পাঁচ যুবক। তারা স্বপ্ন দেখছিলেন বিদেশ গিয়ে সংসারের অভাব ঘোচাবেন। এজন্য প্রতিবেশী মিলন মিয়ার প্রলোভনে তার পরিবারকে প্রায় ২৩ লাখ টাকা দেন। কিন্তু পরে কাতারে (বিদেশ) গিয়ে তারা প্রতারণার শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসেন। এখন তারা সর্বশান্ত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের জামুডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচ যুবক ও তাদের পরিবারের আহাজারির দৃশ্য। বিদেশ (কাতার) গিয়ে প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার হওয়া এই যুবকরা লাখ লাখ টাকা খুইয়ে বর্তমানে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।


বিজ্ঞাপন


প্রতারণার শিকার যুবকরা হলেন—জামুডাঙ্গা গ্রামের দিনমজুর খয়বর রহমানের ছেলে ছামিউল ইসলাম (৩০), আলমগীর হোসেনের ছেলে মশিউর রহমান (২১), তাজুল ইসলামের ছেলে পাপুল মিয়া (২৪), মজিদ মিয়ার ছেলে রায়হান মিয়া (২০) এবং সেকেন্দার আলীর ছেলে সোহেল রানা (২৯)।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দামোদরপুর ইউনিয়নের মরুয়াদহ (কিশামত খেজু) গ্রামের বদিয়াজ্জামানের ছেলে মাহাবুর রহমান লিটন কাতারে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত। কিছু মাস আগে প্রতিবেশী ওই পাঁচ যুবককে কাতারে যাওয়ার প্রলোভন দেন লিটন ও তার ভাই মিলন মিয়া। সরল বিশ্বাসে বদিয়াজ্জামানসহ তার পরিবারকে ওই যুবকরা প্রত্যেকে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা করে, মোট ২৩ লাখ টাকা প্রদান করেন। এরপর লিটন তাদের কাতারে নিয়ে কাজের বেতন নিয়ে প্রতারণা এবং শারীরিক নির্যাতন চালান। এছাড়া, পাসপোর্ট ব্লক করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এর ফলে, যুবকরা বিভিন্ন কৌশলে দেশে ফিরে আসেন। বর্তমানে তারা লিটন ও তার পরিবারের কাছ থেকে টাকা ফেরত চাইলেও কোনো উত্তর পাচ্ছেন না। বরং, তারা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সোহেল রানা ও ছামিউল ইসলামসহ অন্যান্য যুবকরা জানান, তারা কাতারে যাওয়ার জন্য প্রতিবেশী বদিয়াজ্জামান গংদের প্রায় ২৩ লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু লিটনের প্রতারণার শিকার হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। এখন তারা টাকা ফেরত চাইলেও কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় শিক্ষক ছাত্তার মিয়া ও মতিন মিয়া জানান, বদিয়াজ্জামানের ছেলে মাহাবুর রহমান লিটন কাতারে আছেন। কাতারে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তিনি ওই পাঁচ যুবকের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়েছেন। লিটন মিয়ার প্রতারণার কারণে যুবকরা বাড়ি ফিরেছেন। এর একটি সুষ্ঠু সমাধান হওয়া প্রয়োজন।


বিজ্ঞাপন


এদিকে, অভিযুক্ত মাহাবুর রহমান লিটনের দুলাভাই ফারুক মিয়া বলেন, ‘যুবকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বৈধ ভিসায় তাদের কাতারে পাঠানো হয়েছে। তারা সেখানে কাজ করতে না পেরে দেশে ফিরেছেন। এজন্য আমরা দায়ী নই।’

অভিযুক্ত মাহাবুর রহমান লিটন মোবাইলফোনে বলেন, ‘ওই যুবকরা ফ্রি ভিসায় কাতারে এসেছেন। সেখানে কাজের বেতন কম থাকায় তারা দেশে ফিরেছেন। এজন্য আমি দায়ী নই।’

এ বিষয়ে দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর