মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আলু গাছ উপড়ে ফেলেছে প্রতিপক্ষ

জেলা প্রতিনিধি, জয়পুরহাট
প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম

শেয়ার করুন:

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আলু গাছ উপড়ে ফেলেছে প্রতিপক্ষ

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে জয়পুরহাটের কালাইয়ে রাতের আঁধারে ৫৭ শতাংশ জমির আলু গাছ উপড়ে ফেলেছে প্রতিপক্ষ। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলের মালিক দুই বর্গাচাষি।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাতের কোনো এক সময়ে জমির মালিকের প্রতিপক্ষ তার লোকজন নিয়ে ওই জমিতে গিয়ে গাছগুলো উপড়ে ফেলে। এ ঘটনা ঘটেছে উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে।


বিজ্ঞাপন


জমি দখল নিয়ে গত আমন রোপণের পর প্রতিপক্ষ ওই জমিতে গিয়ে ধান গাছও উপড়ে ফেলেছিল। ওই সময় মারপিটের ঘটনাও ঘটেছে। সেই থেকে উভয় পক্ষের আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। তারপরও ওই জমিতে আলু গাছ উপড়ে ফেলার ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন

গাছের সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা

এ ঘটনায় জমির মালিক তেলিহার গ্রামের জালাল উদ্দিন এবং মান্দাই গ্রামের হাসকর আলী বাদী হয়ে প্রতিপক্ষ বৈরাগী গ্রামের বাসিন্দা মৃত ছফির উদ্দিনের ছেলে নুর আলম (বর্তমানে তালোড়া বাইগুনী গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে থাকেন) নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। প্রতিপক্ষের এমন কর্মকাণ্ডে বর্গাচাষিরা আতঙ্কে জীবনযাবন করছেন।

শনিবার নয়াপাড়া মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পুরো জমির আলু গাছগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে। গাছগুলো মাটিতে পড়ে আছে। এসময় কথা হয় বর্গাচাষি নয়াপাড়া গ্রামের তানজির ও ঠান্ডা মিয়ার সঙ্গে। তারা জানান, দু’জন মিলে জমির মালিক জালাল ও হাসকরের থেকে ৫৭ শতাংশ জমি এক বছরের জন্য বর্গা নেন। জমিতে লাল জাতের দেশি পাকড়ি আলু রোপণ করেন তারা। দুই সেচ দেওয়ার পর গাছগুলো বড় হয়েছে। নিড়ানি দিয়ে বেঁধে দেওয়ার জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। জমির মালিকানা নিয়ে তাদের দ্বন্দ্বের জেরে গত রাতে নুর আলম তার লোকজন নিয়ে এসে পুরো জমির গাছগুলো উপড়ে ফেলেছে। দ্বন্দ্ব জমি নিয়ে তবে ফসল নষ্ট কেন?


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

রাতের আঁধারে আলুর গাছ উপড়ে ফেলল দুর্বৃত্তরা

জমির মালিক জালাল উদ্দিন ও হাসকর আলী বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর আগে আমরা নয়াপাড়া গ্রামের আশরাফ আলী চৌধুরীর কাছে থেকে জমিগুলো ক্রয় করেছি। সেই থেকে ভোগদখল করে আসছি। জমিগুলো সবসময় বর্গা দেওয়া হয়। এবার বর্গাচাষিরা ওই জমিগুলোতে ফসল ফলান। হঠাৎ করে গত বছর বৈরাগী গ্রামের নুর আলম ওই জমিগুলো নিজের দাবি করেন। গত আমন রোপণের সময় তিনি জমিতে এসে ধান গাছ উপড়ে ফেলে। জমিগুলো নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। থানায় জমি নিয়ে সালিশও হয়েছে। তারপরও সে বার বার ফসল নষ্ট করেই যাচ্ছে। তারা আরও বলেন, জমির দলিলপত্র সঠিক থাকার পরও কেন প্রতিপক্ষ আমাদের এত নির্যাতন করছেন। আর কেনই বা সে একের পর এক খেত নষ্ট করছেন। জমি যদি তারই হয়, মামলার রায় তার পক্ষেই যাবে। আমরা আদালত যে রায় দিবে তা মেনে নেব।

নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও উদয়পুর ইউপি সদস্য নুরনবী সরকার বলেন, আদালতে জমির মামলা চলমান রয়েছে। নুর আলম বারবার বর্গাচাষিদের ফসল নষ্ট করেই যাচ্ছে। জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। কিন্তু ফসল নষ্টের অধিকার কারও নেই। এর একটা বিহিত হওয়া দরকার।

আলুর গাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ অস্বীকার নুর আলম বলেন, জমি নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। আমি আদালতের রায়ে বিশ্বাসী । কেন রাতের আঁধারে আলুর গাছ উপড়ে ফেলব। দ্বন্দ্ব আছে, দোষ দিতেই পারে। তাই বলে ফসল নষ্ট করতে পারি না।

কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, আলু গাছ উপড়ে ফেলার বিষয়ে আমি অবগত, তবে এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর