মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা

অতিথি পাখিতে মুখরিত চা বাগান

পুলক পুরকায়স্থ, মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৫২ পিএম

শেয়ার করুন:

অতিথি পাখিতে মুখরিত চা বাগান

শীতের আগমনে মৌলভীবাজারের বিভিন্ন চা বাগানে মুখর হয়ে উঠেছে ভিন দেশি পরিযায়ী পাখির আনাগোনায়। পাখির কলকাকলিতে সৃষ্টি হয়েছে এক মধুর গুঞ্জন।

চা বাগানের সঙ্গে পাখির এমন মিতালী দেখতে আসছেন পাখিপ্রেমীরা। অপার প্রকৃতির মনোরম দৃশ্য দেখে মুগ্ধ তারা।


বিজ্ঞাপন


শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মাথিউড়া চা বাগানে পাখিদের আনাগোনার এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সবুজে মোড়ানো মাথিউড়া চা বাগানে শীত আসলে এখানে পাখিপ্রেমীরা আসেন সবুজ টিলার নিচে পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি লেক দেখতে। এখানে কচুরিপানা শাপলাসহ আছে নানা জাতের জলজ উদ্ভিদ। খাদ্য ও নিরাপত্তা থাকায় ভালবাসার টানে বার বার ফিরে আসে পরিযায়ী পাখিরা। যদিও এবার পরিযায়ী পাখির উপস্থিতি অনেকটা কম।

thumbnail_IMG_20250104_141409

এই লেকে ২ থেকে ৩ বছর ধরে পরিযায়ী পাখি সরালি, বালিহাঁস, পানকৌড়ি ও সাদাবক আসে। চা বাগানের লোকজন পরিযায়ী পাখিদের আপন করে নিয়েছে। তাই আবারও ফিরে আসছে পরিযায়ী পাখিরা। বাগানের বাসিন্দারা পাখিগুলোর সঙ্গে আত্মীয়ের মতোই আচরণ করেন। তারা কখনও পাখিদের ক্ষতি হোক এমন কাজ করেন না। শিকারিদের হাত থেকে রক্ষার জন্য সব সময় পরিযায়ী পাখিদের নজরে রাখেন তারা।


বিজ্ঞাপন


তবে শীত দেরীতে নামায় পাখিপ্রেমীরা জানান, বিগত বছরের তুলনায় এবার পরিযায়ী পাখি অনেকটা কম এসেছে। ওরা শীতে আসে, গরমে চলে যায় বলে এদের আদর করে বলা হয় অতিথি পাখি। সকাল- বিকেল পাখির উড়াউড়ি আর জল কেলিতে মুগ্ধ হন বেড়াতে আসা পাখিপ্রেমীরা। অনেকেই ছবি তুলেন আবার কেউ পাখির উড়াউড়ির দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে নেন।

আরও পড়ুন

সবুজ মাল্টায় রঙিন স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা

বাগানে বেড়াতে আসা কাজী আদনান বলেন, সবুজ বাগানের ভেতর লেকের পারে বসে পাখির দৃশ্য আর মধুর গুঞ্জন খুবই ভালো লাগে। হৃদয়ে এক অদ্ভূত প্রশান্তি দিচ্ছে।

আরেক পাখিপ্রেমী মনন বিশ্বাস বলেন, শীতে মৌলভীবাজারের হাওর-বাওর জলাশয় ও ডুবায় পরিযায়ী পাখিদের আগমন ঘটে। হাঁস জাতীয় সরালি পাখির আগমন বেশি হয়। এদের কিচিরমিচির ডাকে এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে। এখানে এসে খুব ভালো লেগেছে।

পরিযায়ী পাখিদের নিরাপত্তা দিলে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ আরও সুন্দর হয়ে উঠবে জানিয়ে রাজনগর উপজেলার পরিবেশকর্মী তুহিনুর রশিদ বলেন, শীতের শুরুতেই পাখিদের আগমন প্রকৃতিতে দারুণ আমেজ সৃষ্টি করেছে। একটু উষ্ণতার জন্য পরিযায়ীরা মঙ্গোলিয়া, তিব্বত, রাশিয়া, সাইবেরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হিমালয়ের পাদদেশ বাংলাদেশে আসে। এদের মধ্যে রয়েছে সরালি, বালিহাঁস, শামুকখোলসহ আরও নাম নাজানা অনেক পাখি। কিন্তু বাজারে বিক্রির জন্য বিষটোপ, জালের ফাঁদ ও অন্যান্য বিভিন্ন ধরণের ফাঁদ ব্যবহার করে পরিযায়ী পাখি শিকার চলছে। এগুলো বন্ধে প্রশাসনের দ্রুত আইন প্রয়োগ দরকার।

thumbnail_IMG_20250104_141409

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগান কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশে পরিযায়ী পাখিদের উপস্থিতি বৈচিত্র্যময়। আমরা পাখিদের নিরাপত্তার জন্য চা শ্রমিকদের সচেতন করি। সীমাবদ্ধতার জন্য ব্যাপকহারে পর্যটকদের আনাগোনার সুযোগ দেওয়া যায় না।

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী কর্মকর্তা গোলাম সরওয়ার জানান, পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করেছে। শীতের তীব্রতা বাড়লে আরও বেশি পাখি আসবে। এলাকাবাসীকে আরও সচেতন করার জন্য আমরা সেখানে যাব।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর