শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

মাদারীপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি সদস্যসহ নিহত ৩

জেলা প্রতিনিধি, মাদারীপুর
প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩২ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক ইউপি সদস্য ও তার ছেলেসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। সংঘর্ষের সময় শতাধিক ককটেল ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

শুক্রবার সকালে উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের মধ্যেরচর এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়।


বিজ্ঞাপন


নিহত ইউপি সদস্য হলেন- বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আক্তার শিকদার। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। নিহত বাকি দুজনের মধ্যে রয়েছেন আক্তার শিকদারের ছেলে মারুফ শিকদার ও তাদের সমর্থক একই এলাকার রশিদ চৌকিদারের ছেলে সিরাজ চৌকিদার।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার শিকদারদের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে ফকির বংশের লোকজনের। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর এলাকা ছাড়েন আক্তার। চার মাসেরও বেশি সময় পর দুই শতাধিক লোক নিয়ে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে এলাকায় ফিরেন। এসময় দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে ছেলে ও এক সমর্থকসহ প্রাণ হারাতে হয়েছে তাকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোররাতে শরীয়তপুরের নতুনবাজার এলাকা দিয়ে আক্তার শিকদার তার লোকজন নিয়ে মধ্যেরচর এলাকায় প্রবেশ করেন। প্রথমে তারা জলিল ফকির, মোকলেস ফকির, মিজান আকন, শাহাবুদ্দিন ফকির, লাটু ব্যাপারী, বশার ব্যাপারী, আলী সরদারের বাড়িতে হামলা চালান। পরে তারা একত্র হয়ে প্রতিরোধ গড়লে শিকদাররা পালান।

আক্তার শিকদার এলাকায় প্রবেশ করে হামলা চালাচ্ছে এমন খবর পেয়ে এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয় লোকজনকে জড়ো করেন জলিল ফকিরের লোকজন। পরে আক্তার ও জলিলের লোকজন দেশী অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় শতাধিক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বোমার আঘাতে প্রাণ হারান আক্তার শিকদার। আর তার ছেলে ও সিরাজ চৌকিদারকে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।


বিজ্ঞাপন


মধ্যেরচর এলাকাটি শরীয়তপুর, বরিশাল ও মাদারীপুর জেলার সীমান্ত এলাকা। মধ্যেরচরে মারামারি বাঁধলে শরীয়তপুরের নতুনবাজার ও বরিশালের মুলাদি এলাকার লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীর তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আক্তার মেম্বারের (ইউপি সদস্য) নামে ৩৫টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি হত্যা মামলা। সরকার পতনের পর এলাকা থেকে চলে যান তিনি। শুক্রবার আবার নতুন করে দলবল নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। মধ্যেরচর এলাকার লোকজন তাদের প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে। বোমা বিস্ফোরণে আক্তার, তার ছেলের ও এক সমর্থকের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। এ ঘটনায় আরও অনেকেই আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাই।

মাদারীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ সাব্বির হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।

ইএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন