‘আজকে দেশে নতুন সরকার এসেছে। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হলেন, একবিংশ শতাব্দীর বীরশ্রেষ্ঠ। এখন যে সরকার এসেছে, তারা এতোদিন থাকতে চায় কেন? নির্বাচিত সরকারের আয়ুষ্কাল পাঁচ বছর হলে অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স হওয়া উচিত ৩ মাস। এই মুহুর্তে যদি নির্বাচন হলে নাইন্টি পার্সেন্ট সিট পাবে বিএনপি। তাইলে বিএনপি বসে থাকবে কেনো। আপনি দেশ চালাইবেন, নাক টিপলে দুধ বের হবে, কে আপনি?
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ইটনা সরকারি কলেজ মাঠে ৫৪তম বিজয় উৎসব উদযাপন উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনে উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিদিন বলেন, দ্রুত নির্বাচন দেন। নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। আজ এ বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান থেকে আমরাও ঘোষণা করতে চাই, দ্রুত নির্বাচন দেন। তারেক রহমান বলেছেন ৩১ দফা সংস্কারের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করা হবে। এ দেশ হবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সকল ধর্মবর্ণের মানুষের শোষণমুক্ত অসাম্প্রদায়িক ও ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। সরকারকে বলি, আপনারা দল করবেন, করেন, কিন্তু ; সময়মত নির্বাচন দেন। দেখেন কয়টি আসন পান? জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের মানদণ্ড জনগণের সমর্থন। এখন মানুষের মুখে মুখে ও হৃদয়ে শুধুই ধানের শীষ।’
তিনি তার বক্তব্য আরও বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধ মানে না, তারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। আমাদের নেতা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক। জিয়াউর রহমানকে যারা স্বাধীনতার ঘোষক মানে, তারা মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করতে পারে না। অতীতে বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, কিন্তু শেখ হাসিনার মতো স্বৈরাচারী কোনো আচরণ করেনি। তারমতো অনিয়ম-দুর্নীতির মহোৎসব এবং গুম-খুনের রাজত্ব কায়েম করেনি। এখন আওয়ামী লীগের এমন পরিস্থিতি হয়েছে যে, এক সময় লেখা থাকবে এখানে কোনো আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগের "আ" লিখতেও আগামী ১০ বছর লাগবে।
এর আগে তার স্ত্রী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি উম্মে কুলসুম রেখা তার বক্তব্য বলেন, এই আন্দোলনের সাথে ছাত্ররা মোনাফেকি করছেন। তার একাত্তরকে মানছে না, মুরুব্বিদেরকে মানছে না, তারা কাউকে মানতে চান না। ওরা কি একা একা আন্দোলন করেছে, ছাত্রদল ছিল আমরা ছিলাম। ওদের কয়জন লোক ছিল, এই ছাত্র জনতার? মাঠে এসে দেখেন, নির্বাচন করে দেখেন কতোজন জনতা আপনাদের সাপোর্ট করে। আর সমন্বয়ক সমন্বয়ক বলেন আপনারা কিসের সমন্বয়ক। আপনারা বলে বেড়ান বিএনপি লুটপাট করতেছে আপনারা কি করছেন। এখন যে সরকার আসছে এটাতো এনজিও সরকার। তারা কি করছে তারাতো ব্যাংক দখল করে বসে আছে।
ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য দেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সহ-সভাপতি উম্মে কুলসুম রেখা, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ ইসরাঈল মিঞা, আমিনুল ইসলাম আশফাক, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সুমন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবু নাসের সুমন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ নেভিন প্রমুক বক্তব্য রাখেন।
বিজ্ঞাপন
বক্তব্যের আগে তিন উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের ৭২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দেয়া হয় দলের পক্ষ থেকে। এ সময় ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে তাদের সম্মান জানানো হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ইটনা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. মনির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ রহমান।
দুপুর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকঢোল বাজিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা নিয়ে মিছিলসহ বিজয় উৎসবে যোগ দিতে থাকেন। বিকেল চারটা নাগাদ পুরো ইটনা কলেজ মাঠ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। আলোচনা সভা শেষে রাতে কলেজ মাঠে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।
প্রতিনিধি/ এজে