বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় শেখ হাসিনা সরকার। আন্দোলনের নানা দৃশ্যপট দেয়ালে তুলে ধরা হয়। প্রতিবাদের চিত্রগুলো গ্রাফিতির মাধ্যমে দেয়ালে ফুটিয়ে তুলেন বিপ্লবী শিক্ষার্থীরা। এতে গ্রাফিতির মাধ্যমে দেওয়া হয় প্রতিবাদ, দেশপ্রেম, সাম্য, সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ববোধের বহু বার্তা। আওয়ামী লীগ ও হাসিনা-বিরোধী ছবি, গ্রাফিতি অঙ্কন করেন ছাত্র-জনতা।
কিন্তু মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে দেখা মিলল ভিন্ন চিত্র। গ্রাফিতির ওপর সদ্য জাতীয় স্লোগান থেকে বাদ দেওয়া ‘জয় বাংলা’ লেখা হচ্ছে গ্রাফিতির ওপর। এছাড়াও রয়েছে 'জয় বঙ্গবন্ধু' স্লোগান। এদিকে, ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
নালিতাবাড়ী পৌরশহরের থানা সংলগ্ন দেয়ালগুলোতে সোমবার রাতের কোনো এক সময় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, কারা গ্রাফিতি নষ্ট করেছে, এমন প্রশ্ন জনমনে। গ্রাফিতির ওপর ‘জয় বাংলা’ ও 'জয় বঙ্গবন্ধু' স্লোগান দেখে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। তাদের ধারণা, যারা জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করে না বা মানতে পারেনি, তারাই এসব করেছে।
গ্রাফিতি আঁকনে মুখ্য ভূমিকা পালনকারী শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, ‘রাতের আঁধারে কোনো অপশক্তি গ্রাফিতিগুলো নষ্ট করেছে। গ্রাফিতির ওপর এসব স্লোগান লেখা হয়েছে। হাইকোর্ট ‘জয় বাংলা’ স্লোগান নিষিদ্ধ বা স্থগিত করেছে, এটা তো আমাদের বিষয় নয়। তারা কেন আমাদের গ্রাফিতি নষ্ট করলো?’
শিক্ষার্থী রুহুল সিদ্দিকী রোমান বলেন, ‘জেলা এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, আমরাও হয়তো একটি মামলা করতে পারি। তবে আমরা চাইবো সরকারিভাবেই যেনো একটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
স্থানীয় হাসান তৌফিক তূর্য বলেন, ‘তারা গ্রাফিতির ওপর ‘জয় বাংলা’ না লিখে অন্য কোথাও লিখতে পারতো। তারা কেন আমাদের চেতনার ওপর আঘাত করেছে? যারা এই কাজ করেছে, তারা জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করে না, এটা তারই প্রমাণ।’
বিজ্ঞাপন
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি আপনার মাধ্যমে জানলাম। এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জানতে চাইলে শেরপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র ফারহান ফুয়াদ তুহিন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা অবগত হয়েছি। পরবর্তীতে এ বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছি। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের খোঁজ করছে। এ ব্যাপারে আমরা সবাই বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবো।’
প্রতিনিধি/একেবি