ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অনেক স্থানের ডিভাইডারে বিভিন্ন ধরনের ফুলগাছে বাহারি রকমের ফুল শোভা পাচ্ছে। দেশের সবচেয়ে বেশি যানবাহন চলাচল করা এ রাস্তায় প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার পরিবহন নিয়মিত চলাচল করে। বাস, ট্রাক ও মাইক্রোবাসসহ যানবাহনগুলো যখন মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে তখন ফুলগাছগুলো বাতাসে দুলতে থাকে। মহাসড়কে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচলের সময় বাহারি রকমের ফুলের কারণে গণপরিবহনে থাকা যাত্রীদের মন ভালো হয়ে যায়।
অনেক সময় বাস মহাসড়কের জ্যামে আটকা পড়লে যাত্রীরা পরিবহন থেকে নেমে ফুলগাছের সঙ্গে ছবি তুলে থাকেন। এ সড়কের ডিভাইডারে রয়েছে জারুল, টগর, কদম, রক্তকবরী, হলুদ কবরীসহ নাম না জানা আরও কত রকমের ফুল। তবে এসব ফুলের ভিড়ে নিজের রাজত্ব সাজিয়েছে জারুল ফুল ।
বিজ্ঞাপন
প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে কুমিল্লা আসেন একটি বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা গাউস পেয়ারা খান। তিনি জানান, আমি প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে কুমিল্লা আসি। শনিবার বিকেলে বা রোববার ভোরে আবার ঢাকা চলে যাই অফিসে যোগদানের জন্য। সড়কের মাঝখানে ডিভাইডার থাকার কারণে দুর্ঘটনা কম হয়। আবার ডিভাইডারে অনেক রকমের ফুলের সমারোহ থাকার দরুন অনেক সুন্দর লাগে। বাস কখনও জ্যামে আটকা পড়লে যাত্রীরা তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে ফুলের ছবি তুলে।
ঢাকা-কুমিল্লা অঞ্চলে চলাচলকারী এশিয়া লাইন বাসের চালক তামজিদ হোসেন জানান, আমরা সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ও রোববার প্রায়ই জ্যামে আটকা পড়ি। তখন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডিভাইডারে লাগানো ফুলগাছগুলোর সঙ্গে যাত্রীরা ছবি তুলেন। কেউ কেউ আবার বাস থেকে নেমে মোবাইল দিয়ে ছবি তুলেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনার মাধাইয়া, কাঠের পুল, বুড়িচংয়ের কাবিলা, গৌরিপুর সদর দক্ষিণের সুয়াগাজী, চৌদ্দগ্রামের মিয়ার বাজার, চিওড়া পর্যন্ত সড়ক ডিভাইডারে বেশি দেখা যায় জারুল ফুল।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লা শাখার সভাপতি আলহাজ শাহ্ মো. আলমগীর খান বলেন, আমরা যখন পরিবার-পরিজন নিয়ে কুমিল্লা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে ঢাকায় যাই, তখন সড়কের ডিভাইডারে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছগুলো আমাদের মনে আনন্দ দেয়। ডিভাইডারে থাকা এ ফুলগাছগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে যত্ন করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, উন্নত দেশগুলোতে সড়ক ডিভাইডারের মাঝখানে বিভিন্ন ফুলগাছ থাকে। তাই আমরাও পরিবেশের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য এবং যানবাহনে থাকা যাত্রীদের ভ্রমণ আনন্দময় করে তুলতে এসব ফুলগাছ লাগিয়েছি।
কুমিল্লা গার্ডেনস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা আবু নাঈম বলেন, মহাসড়কে জারুল, সোনালু, রক্তকবরী, বাগান বিলাসসহ আরও বেশ কিছু ফুলগাছ রয়েছে। মহাসড়কের ডিভাইডারে ফুলগাছ লাগানো নিঃসন্দেহে চমৎকার উদ্যোগ। তবে ফুল গাছগুলোর যত্ন নেওয়া প্রয়োজন, যেন ফুলগাছগুলো মরে না যায় । তাহলে দীর্ঘ মেয়াদে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে। ফুলগাছের পাশাপাশি নানান জাতের ফল ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করা যেতে পারে।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডিভাইডারে লাগানো গাছের ফুলগুলো দেখতে সত্যিই মনোমুগ্ধকর। ডিভাইডারে ফুলগাছগুলো থাকার দরুন রাতের বেলায় সড়ক দুর্ঘটনা কম হয়।
প্রতিনিধি/ এমইউ

