চিরবিদায় নিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শতবর্ষী আব্দুস সাত্তার মোল্যা ওরফে বেদুঈন সাত্তার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৯ বছর। তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী, চার ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে শনিবার বিকেলে খুলনা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জানা যায়, বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা ব্রিটিশ আন্দোলনের নেতা নোয়াই মোল্যার ছেলে আব্দুস সাত্তার ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত হয়ে যান। ১৯৬০ সালে বঙ্গবন্ধু তাকে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে নড়াইল সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেন। এরপর নড়াইল সদর ও কালিয়া থানা আওয়ামী লীগের কয়েকটি মেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যেখানেই বঙ্গবন্ধু জনসভা করেছেন সেখানেই তিনি ছুটে গিয়েছেন। বেদুঈন সাত্তার ঐতিহাসিক ৭ মার্সের ভাষণ, নড়াইল, যশোর, খুলনা ও ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধুর প্রায় ১৫টি জনসভায় গিয়েছেন। ১৯৭৩ সালে খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠে এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু তাকে ভালোবেসে ‘বেদুঈন সাত্তার’ নাম দেন। এরপর থেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত সবাই তাকে বেদুঈন সাত্তার হিসেবে চিনতেন।
বিজ্ঞাপন
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার কারণে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর থেকে দীর্ঘ ৩৪ বছর পর্যন্ত স্যান্ডেল, গেঞ্জি এবং ছাতা মাথায় দেননি। পায়ের তালু ফেটে গিয়েছে, প্রচণ্ড শীতে কাঁথা গায়ে বের হয়েছেন, তবু চাদর পরেননি। ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধুর ৫ খুনির ফাঁসি কার্যকরের খবর শুনে ওই দিন থেকে আবার স্যান্ডেল, চাদর এবং ছাতা ব্যবহার শুরু করেন।
প্রতিনিধি/এসএস