নড়াইল সদর উপজেলার ধোপাখোলা এলাকার শিশু বিকাশ ও সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র নন্দনকাননে নবান্ন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে৷
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। দিনব্যাপী চলে পিঠা খাওয়ার ধুম। এছাড়া ছিল গ্রামীণ লোকনৃত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন।
বিজ্ঞাপন
সেখানে নতুন ধানের চাল দিয়ে হরেক রকম পিঠা তৈরি করে আনেন গ্রামীণ নারীরা। গ্রাম বাংলার অন্তত ২৫ পদের পিঠা হাজির করা হয় প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এ নবান্ন উৎসবে। নকশী, দুধ পুলি, দুধ চিতই, চিতই, রসপাকান, ফুলুরি, সবজি, রসপাকান ও ডাল-ঝালের তৈরি অন্তত ২৫ পদের দেশী পিঠা সাজিয়ে রাখা হয় টেবিলে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে ও পিঠাপুলির স্বাদ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে নন্দনকাননে ভিড় জমায় শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। অধিকাংশ নারীদের পরনে লাল শাড়ি, শিশু-কিশোরেরাও পরেছেন একই রঙের কাপড়। মানুষের সরব উপস্থিতিতে মুহূর্তেই মুখর হয়ে ওঠে নন্দনকানন চত্বর।
আয়োজকরা জানান, বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যে নবান্ন অন্যতম। নবান্ন এবং পহেলা বৈশাখ বাদ দিলে বাঙালি সংস্কৃতি থাকে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে উৎসবের মাধ্যমে বাঙালির ঐতিহ্য সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে ধারণা দেওয়া সম্ভব। বাঙালির একটি উদার, সর্বজনীন ও অসাম্প্রদায়িক উৎসবকে ধরে রাখতেই এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
সাইফুর রহমান নামে এক দর্শনার্থী বলেন, আমরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এত ব্যস্ত হয়ে পড়েছি যে গ্রাম বাংলার পিঠাগুলোর নাম আমরা ভুলে গেছি। পিঠাগুলোকে পরিচিত করানোর জন্য নন্দনকানন প্রতি বছর আয়োজন করে এ উৎসব। আমরা চাই আগামীতেও যেন এই আয়োজন অব্যাহত থাকে।
বিজ্ঞাপন
নন্দনকাননের সম্পাদক মায়া রাণী বিশ্বাস বলেন, নবান্ন ও পহেলা বৈশাখ- এই দু’টি অনুষ্ঠানই আমরা নন্দনকাননে পালন করি। প্রতি বছরের মতো এ বছরও নবান্ন উৎসব হচ্ছে। আগে নবান্ন উৎসব হতো যার যার ঘরে ঘরে। নারীরা আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে পিঠা তৈরি করত। আমরা সেটি একটু ভিন্নভাবে পালন করছি৷ ঘরে ঘরে তৈরি করা সেই পিঠাগুলোই এখানে এনে উৎসব করা হচ্ছে। উৎসব দেখতে মানুষ আসছে, এটা দেখে আমরাও খুশি হবো। বাঙালির কৃষ্টিকে ধরে রাখা এবং নতুন প্রজন্ম যাতে এই কৃষ্টিকে বয়ে নিয়ে যেতে পারে সেই চেষ্টায় আমাদের এই আয়োজন।
প্রতিনিধি/ এমইউ

