পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের দীঘিরজান গ্রামে দুই পরিবারের সম্মতিতে মালয়শিয়া প্রবাসী সোহাগ শেখের (৩২) সঙ্গে ভিডিও কলে রিমা আক্তার (২৭) নামের এক যুবতীর বিয়ে হয় ৯ বছর আগে।
সোহাগ শেখ উপজেলার দক্ষিণ দিঘীরজান গ্রামের আলাউদ্দিন শেখের ছেলে। এছাড়া রিমা আক্তার একই উপজেলার পূর্ব বানিয়ারী গ্রামের মোতালেব দরানির মেয়ে।
বিজ্ঞাপন
রিমা আক্তারের পারিবারিক সূত্রে জানান যায়, সোহাগ শেখ প্রবাসে থাকা অবস্থায় ভিডিও কলের মাধ্যমে রিমা আক্তারকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। পরে সোহাগ শেখ দেশে ফিরলে ২০১৫ সালে অক্টোবর মাসের ১৪ তারিখে রেজিস্ট্রার কাজির মাধ্যমে কাবিন মূল্যে বিবাহ সম্পন্ন করা হয়। বিবাহের পরে চার মাস দেশে থাকার পরে পুনরায় বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তত হন এবং রিমা আক্তারের কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করেন। রিমার বাবা (মোতালেব দরানি) মেয়ের সুখের চিন্তায় ধারদেনা করে ৫ লাখ টাকা এনে জামাতার হাতে দেন এবং জামাতা পুনরায় প্রবাসে চলে যান। প্রবাসে চলে যাওয়ার কিছুদিন পরে রিমার খোঁজ খবর নেওয়া বন্ধ করে দেন। কয়েক মাস এভাবে চলার পর সোহাগকে দেশে ফিরে আসার জন্য রিমা একটি উকিল নোটিশ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী সোহাগ রিমার কিছু অন্তরঙ্গ ছবি ফেসবুকে ফেক আইডির মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
এদিকে রিমা আক্তারকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি খুদে বার্তায় বলেন, ‘বাপেরও বাপ আছে। এখন থেকে পাবি তোর ভিডিও, তুই কি মনে করেছিস, তোর ভিডিও দেখার জন্য রেডি থাক’। এছাড়া একটি অডিও ক্লিপে সোহাগ জানান, আমি আর বাংলাদেশে কখনও ফিরব না, তোরা কীভাবে সমাজে মুখ দেখাবি, তুই যাতে গ্রামে কারও সামনে মুখ দেখাতে না পারো সেটার ব্যবস্থা আমি করব। তুই আমার কথা যখন শুনলি না, তোর পরিবার কীভাবে রাস্তায় বের হবে। আজকে ফেসবুক চালু দিছি আস্তে আস্তে সব পাবি। তোদের দেখলেও মানুষ থুথু ফেলবে।
এবিষয়ে রিমা আক্তার জানান, আমার নাম দিয়ে ফেসবুকে আইডি খুলে আমার অন্তরঙ্গ ছবি ভাইরাল করছে সোহাগ। এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে। আমি মানসিকভাবে খুবই ক্লান্ত আমি লজ্জায় কয়েকবার আত্মহত্যা করতে গেছিলাম। আমার পরিবার দেখে আমাকে উদ্ধার করে। পরবর্তী আমি নাজিরপুর থানায় উক্ত Rima Rima নামের ফেসবুকে একাউন্টের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করি। উক্ত আইডি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু থেমে নেই সোহাগ পুনরায় আবার আমার নাম দিয়ে ফেসবুকে আইডি খুলে আমার অন্তরঙ্গ ছবি ভাইরাল করছে। আমি মনে হয় আর বেশি দিন বাঁচতে পারব না। যেকোনো সময় যেকোনো বড় ধরনের সিদ্ধান্তে চলে যাব। আমি সোহাগের পরিবারকে অনেকবার জানালে তারা কর্ণপাত করেননি। আমি আইনের মাধ্যমে এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি বেঁচে থাকতে চাই।
বিজ্ঞাপন
প্রবাসী সোহাগ শেখ জানান, আমি টাকা নিই নাই এবং কোনো ফেসবুকে আইডি দিয়ে রিমা (আমার বউয়ের) ছবি বা ভিডিও ভাইরাল করি নাই। এগুলো আমার নামে ষড়যন্ত্র। আমাকে ফাঁসাতে তারা আমার নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।
প্রতিনিধি/এসএস