শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

কুমিল্লায় কলেজ অধ্যক্ষের পদায়ন নিয়ে সংঘর্ষ, ২০ শিক্ষার্থী আহত

জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা
প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বরকোটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের ফেরার খবরে সৃষ্ট উত্তেজনায় স্থানীয়দের হামলায় ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। ক্যাম্পাসজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। থানা, উপজেলা চত্বরে ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।


বিজ্ঞাপন


সরেজমিন ঘুরে ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গেল ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরে উপজেলার বরকোটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিনের অপসারণ চেয়ে কলেজে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। এরপর ১৮ আগস্ট থেকে ছুটিতে আছেন অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন। ছুটি কাটিয়ে আজ জসিম উদ্দিন কলেজে যাবেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে কিছু শিক্ষার্থী তাকে বরণ করে নিতে উপস্থিত হন কলেজ এলাকায়। এদিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে অধ্যক্ষকে কলেজে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক। এসময় তারা লাঠি-সোঁটা নিয়ে কলেজ এলাকায় মহড়া দেয়ন।

একপর্যায়ে ছাত্রদের সঙ্গে স্থানীয়দের বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় স্থানীয়দের হামলায় ২০ শিক্ষার্থী আহত হন। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন, সাজ্জাদ, দ্বিপ, ফয়সাল, মৃদুল, কামরান, সিয়াম, রিমন, তানভীর, ফয়সাল, জিসান, হামিদা, সাদিয়া, মনিকা, দিয়া, ইসরাত জাহানসহ আরও কয়েকজন।

এই ঘটনায় বেলা ১২টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দির গৌরীপুর বাস স্টেশনে এসে শিক্ষার্থীরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এসময় মহাসড়কের ঢাকা ও চট্টগ্রামমুখী লেনে প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এসময় ছাত্ররা যুবদল নেতা রুহুল আমিন, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক সাইফুল, মাসুদ ও বিল্লালসহ কয়েকজন শিক্ষকের অপসার চেয়ে স্লোগান দেন। পরে হাইওয়ে পুলিশের চেণ্টায় ঘণ্টাব্যাপী চলা অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে বেলা ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা দাউদকান্দি মডেল থানা এলাকা থেকে মিছিল করে উপজেলা চত্বরে এসে জড়ো হন।


বিজ্ঞাপন


শিক্ষার্থী সাজ্জাদ, ইয়ামিন, জিসান বলেন, আমাদের প্রিন্সিপাল স্যার কলেজে আসবেন, সেজন্যে আমরা কলেজে যাই। কলেজে পৌঁছার আগেই রুহুল আমিনের লোকজন ও ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালসহ আরও কয়েজন মিলে আমাদের ওপর হামলা করে। আমাদের ১৫/২০ জন সহপাঠী আহত হয়েছেন।

Comilla2

দাউদকান্দি উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রুহুল আমিনের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি৷

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু ওবায়েদ বলেন, ছাত্রদের অবরোধের ফলে সড়কের উভয় মুখে যানজটের সৃষ্টি হয়।  হাইওয়ে পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে।

দাউদকান্দি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জুনায়েত চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক ও পৌরসদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। আমরা বিষয়টি দেখছি।

দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাঈমা ইসলাম জানান, দুই অধ্যক্ষ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সবাইকে নিয়ে বসতে হবে এই সমস্যার সমাধানে। আর কারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন বলেন, আজকে আমার ছুটি শেষ করে কলেজে যোগদান করতে যাই। এসময় যুবদল নেতা রুহুল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমিনুলের নির্দেশে বহিরাগত দিয়ে আমার কলেজের ছাত্র/ছাত্রীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা৷

প্রতিনিধি/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন