যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেতুটি থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে নতুন নাম কী হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে নাম পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। সেতুর নাম পরিবর্তন সম্পর্কে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে এবং এটি সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই কার্যকর হতে পারে।
এ বিষয়ে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘সেতুটির নাম পরিবর্তনের জন্য উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারির উদ্বোধনের আগেই নাম পরিবর্তন হতে পারে। তবে এখনও নাম পরিবর্তনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও জানান, সেতুটির মূল নির্মাণ কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৬ শতাংশ। ‘আমরা চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু করতে পারব এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে পারে।’
নবনির্মিত এই সেতুটি ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এটি দেশের দীর্ঘতম রেল সেতু। সেতুটি নির্মাণের পর, ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে, যা পূর্বের সেতুর তুলনায় ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় সাশ্রয় করবে। এতে করে সেতুর ওপর ক্রসিংয়ের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়। রেল যোগাযোগের উন্নয়নে এই সেতুর নির্মাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর সেতুটিতে ফাটল দেখা দিলে ট্রেনের গতিতে সমস্যার সৃষ্টি হয়। বর্তমানে প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে।
বর্তমান সেতুতে সমস্যা সমাধানে নতুন রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার, যাতে করে দ্রুত গতিতে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা যায়। নতুন সেতুতে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাইস্পিড) ট্রেন চলাচলের উপযোগী ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যার ফলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
বিজ্ঞাপন
প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা নির্ধারিত হলেও, পরবর্তীতে তা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশিয় উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
বর্তমানে রেল জাদুঘরের নির্মাণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় প্রকল্পটির খরচে কিছুটা সাশ্রয় হয়েছে।
প্রতিনিধি/একেবি