চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রতিবাদ ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় গোল চত্বরে সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে বিক্ষোভ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধন শেষে কুবির কেন্দ্রীয় মসজিদে গায়েবানা জানাজা পড়েন তারা।
বিজ্ঞাপন
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘ইসকনের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘চিন্ময়ের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘একটা একটা ইসকন ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘ইসকনের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘শাহবাগীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘তুমি কে আমি কে, সাইফুল সাইফুল’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকে।
![]()
মানবন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ইসকন কোনো ধর্মীয় সংগঠন নয়। এটি একটি উগ্রবাদী গেরুয়া সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা ভারতের প্রেসক্রিপশনে এদেশকে অস্থিতিশীল করে ভারতীয় আধিপত্যবাদের কালো ছায়ায় দেশকে ঢেকে দিতে চায়। আমরা কোনো হিন্দুকে দেখিনাই ইসকনের এই উগ্রবাদিতার বিরুদ্ধে কথা বলতে। অথচ আমরা তাদের মন্দির পাহারা দিয়েছি। যারা ইসকনের সঙ্গে জড়িত, যারা এদেশে বসে ভারতের দালালি করবে তাদের জায়গা এদেশে হবে না।
এসময় তারা আরও বলেন, আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগের আমলেও ৯০ শতাংশ মুসলিম হয়েও আমরা ছিলাম সংখ্যালঘু, তারা ছিল সংখ্যাগুরু। আজও অবস্থা আগের মতোই। তারা আমাদেরকে সন্ত্রাসী বলে, কিন্তু আমরা যদি সন্ত্রাসী হতাম তাহলে এদেশে কোনো মন্দির থাকতো না। কিন্তু ইসলাম শান্তির ধর্ম বলেই আমরা এখনও শান্তি রক্ষা করে যাচ্ছি। ইসকন একটি জঙ্গি সংগঠন, তাদেরকে দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে। যেসব মিডিয়া এখনও ভারতের দালালি করছে, তাদেরকে এর জবাব দিতে হবে।
বিজ্ঞাপন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এম এইচ আবির বলেন, ইসকন আমার ভাইকে হত্যা করে প্রমাণ করে দিয়েছে তারা জঙ্গী সংগঠন। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। তাই বলে এটা ভাববেন না আমাদের ভাইকে হত্যা করার পরেও আমরা মুসলমানরা বসে থাকব। ভারতের দালালরা তোমরা যেখানেই থাকো আমরা তোমাদের প্রতিহত করব। আমরা দেখেছি ইসকন ৫ই আগস্টের পর নানা ধরনের প্রোপাগাণ্ডা ছড়িয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। আমরা তাদের বলে দিতে চাই মুসলমানদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিবেন না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইসকনকে নিষিদ্ধ না করে তাহলে ছাত্রজনতা প্রশাসনের বিরুদ্ধে চলে যাবে।
লোক প্রশাসন ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইউসুফ ইসলাহী বলেন, অন্যায়ভাবে কেউ যদি একটা মানুষকে হত্যা করে সে যেন একটা জাতিকে হত্যা করল। আমরা আজকে মানববন্ধনে ইসকনের জঙ্গীদের বলে দিতে চাই আপনারা দেখুন আমাদের একজন মুসলিমকে হত্যা করার পর কীভাবে পুরো বাংলাদেশের মুসলমানরা ফুঁসে উঠেছে। আরএসএস এর এজেন্ডা এই দেশে বাস্তবায়ন করতে পারবে না। আমরা দেখেছি এই ক্যাম্পাসে কীভাবে ইসকন দাপটের সঙ্গে কাজ করেছে। সারা বাংলাদেশে ইসকন কেমন দাপটের সঙ্গে চলেছে। এই ক্যাম্পাসে কীভাবে স্বপ্নীল আমাদের নবীকে অবমাননা করে পার পেয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের কাছে স্বপ্নীলকে দেশে এনে বিচারের করার দাবি জানায়। পাশাপাশি এই ক্যাম্পাসে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়।
এরপর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের গোল চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে কেন্দ্রীয় মসজিদে আইনজীবী সাইফুলের গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিনিধি/এসএস

