বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে মানিকগঞ্জে উদযাপিত হয়েছে নবান্ন উৎসব। এই উৎসবে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেণির পেশার শত শত মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) ঘিওর উপজেলার কাউটিয়া গ্রামে প্রাকৃতিক কৃষি কেন্দ্রে এই উৎসব পালিত হয়। সকালে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত অতিথিরা মিলে ফসলের মাঠে গিয়ে আমন ধান কাটেন। জারি-সারি গান আর হই হুল্লোড় করে এক বিঘা জমির ধান চোখের পলকেই কাটা শেষ করেন তারা। সেই ধান মাড়াই করা হলো খেতের পাশেই।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
এর পর সযত্নে বেতের কাঠায় ধান ভরে নেয়া হলো ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি ঘরে। ঢেঁকিছাটা নতুন চালের গুড়ো, ডাবের পানি, নারিকেল, কলা, গুড় দিয়ে নবান্ন আহার, মুঠো পিঠা, সেমাই পিঠা ও পায়েশ। নারীরা চালের গুড়া দিয়ে নবান্ন উৎসবের আঁলপনা আকেন বাড়ির উঠোন। এর পর কলাপাতায় আহার পর্ব শেষে শুরু হয় নবান্নের ওপর আলোচনা সভা, শস্য প্রদর্শনী, নাচ, বাউল গান, শস্যের গীত, রম্য কৌতুক ও বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ খেলাধুলা। উৎসব আঙিনাজুড়ে বসে মাটির তৈজসপত্র, নকশি কাঁথা ও তাঁতের গামছা-শাড়ির মেলা।
প্রাকৃতিক কৃষি কেন্দ্রের সমন্বয়কারী দেলোয়ার জাহানের সভাপতিত্বে নবান্ন উৎসবের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, প্রাকৃতিক কৃষি গবেষক ইফতেখার আলী, নিরাপদ কৃষি খাদ্য প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশনের সচিব প্রফেসর রেজাউল করিম সিদ্দিকী, সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মাহেলা, কুমিল্লা থেকে আসা আইনজীবী বিলকিস আক্তার, শিক্ষক জেসমিন আক্তার, ব্যবসায়ী মাহফুজ শাহীন, মো. সাওম, চট্টগ্রামের ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক শাহিন শিরীন, নারী উদ্যোক্তা ডালিমা আক্তার, স্থানীয় কৃষক কালাচাঁদ, ইউপি সদস্য মো. লেবু মিয়া প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
এসময় বক্তারা বলেন, সাধারণত কার্তিকের শেষে ও অগ্রহায়ণের শুরুতে আমন ধান ঘরে তোলার সময় এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আমরা এবার ৭ম বারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করেছি। কৃষকদের পবিত্র শ্রম থেকে কেবল ফসলই উৎপন্ন হয় না, তা থেকে তৈরি হয় সংস্কৃতির উদার আবাহন। প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যাক আমাদের নবান্ন উৎসবের রঙ। তারা জানুক কৃষকের উদয়াস্ত পরিশ্রমের কারণেই আমাদের পেটে ভাত জোটে। এ ধরনের উৎসব গ্রামে গ্রামে আরও বেশি হওয়া উচিত।
প্রতিনিধি/এসএস