কুমিল্লা নগরীজুড়ে যে কয়েকটি বড় পুকুর রয়েছে, তার মধ্যে ১৫নং ওয়ার্ডের পুরাতন মৌলভীপাড়ার পুকুরটি অন্যতম। এই পুকুর ও চারপাশের রাস্তা কাশারীপট্টি, পুরাতন মৌলভীপাড়া, কাটাবিল, বজ্রপুর, হযরতপাড়া এবং হাউজিং এস্টেটসহ বেশ কয়েকটি এলাকার ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ ব্যবহার করেন। এই পুকুরের চারপাশ নগরীর একটি বড় অংশের মানুষের চলাচলের অন্যতম পথ হিসেবে বিবেচিত। এছাড়া এই পুকুরের পানি গোসলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করছে তিন গ্রামের মানুষ।
কিন্তু গত আট মাস ধরে এই মৌলভীপাড়া পুকুরটি এবং চলাচলের তিন পাশের রাস্তা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। পুকুরের পানি নিষ্কাশনের পর অনেক মাটি তুলে বিক্রি করায় পুকুরের তিন পাশের রাস্তা ভেঙে পড়ে পুরো এলাকা যেন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। বিদ্যুতের খুঁটিগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে হেলে পড়েছে। রাস্তার বিভিন্ন অংশ ভেঙে পুকুরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ওই রাস্তার তিন পাশ দিয়ে এখন যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মারাত্মকভাবে রাস্তা ধেবে ভেঙে যাওয়ার কারণে আশেপাশের বাড়িঘরগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয় মানুষ অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। বিশেষ করে রাতের বেলায় এই রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচলও মুশকিলের ব্যাপার।
বিজ্ঞাপন
কাটাবিল এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন ও বাবুল মিয়া জানান, আমাদের কাটাবিল এলাকার মানুষজন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। কিন্তু পুরাতন মৌলভীপাড়া পুকুর পাড়ের চারদিকের রাস্তাটি ৮/৯ মাস যাবত ধেবে ভেঙে যাওয়ার কারণে এই এলাকার লোকজন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারছেন না। ফলে এখান দিয়ে চলাচলকারী পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে।

হযরতপাড়া এলাকার স্থানীয় সংবাদকর্মী গোলাম হোসাইন তামজিদ জানান, হযরতপাড়া ও হাউজিং এলাকার লোকজন পুরাতন মৌলভী পুকুর পাড়ের রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় এ রাস্তার তিনটি পাড় দিয়ে মানুষজন চলাচল করতে পারছেন না। এতে করে হাউজিং এস্টেট ও হযরতপাড়া এলাকার লোকজন এখন অন্য রাস্তা দিয়ে চলাচল করছেন। এতে তাদের ভোগান্তি ও সময় ক্ষেপণ হচ্ছে অনেক।
বিজ্ঞাপন
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার তাদের বিদায়ের শেষ মুহূর্তে এই সড়কটি পুনঃনির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করেছিল। কাজ পেয়েছিলেন স্থানীয় কুসিক কাউন্সিলর সাইফুল বিন জলিল। কিন্তু বৃষ্টির জন্য কাজ শুরু করে আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি কাজ শুরু করার কথা থাকলেও তা হয়নি।

স্থানীয় লোকজন জানান, আট মাস ধরে এই পুকুর ও তিন পাশের রাস্তার বেহাল অবস্থা। কাজে ধীরগতি, এখন আবার ২/৩ মাস ধরে কাজ বন্ধ। ফলে আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি। রাস্তাটির দ্রুত সংস্কার দরকার। সম্প্রতি সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামছুল আলম ঢাকা মেইলকে বলেন, এ রাস্তার কাজটির টেন্ডার হয়েছে। কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু কোনো একটা কারণে ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দেন। আমি সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়েছি। ঠিকাদার আবার কাজ শুরু করছেন। কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য ঠিকাদারের হাতে এখনো নয় মাস সময় আছে।
প্রতিনিধি/জেবি

