শিশির ভেজা প্রকৃতি জানান দেয় হেমন্ত পেরিয়ে আসছে শীত। বছর ঘুরে আবার এসেছে আরেকটি আয়োজনের উপলক্ষ। আবহমান বাংলার অন্যতম উৎসব নবান্ন মৌসুম এটি। কিন্তু কালক্রমে হারিয়ে যেতে বসেছে এই নবান্ন উৎসব।
দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলায় শুরু হয়েছে হেমন্তের ধান কাটা। কিন্তু হেমন্তের অন্যতম নবান্ন উৎসব এখন আর চোখে পড়ে না। কালক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবটি।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে যতগুলো উৎসব হয় সেগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রচলিত নবান্ন উৎসব। হেমন্তকালের এ উৎসব ছিল সর্বজনীন।
![]()
জানা যায়, হেমন্তের ফসল কাটাকে কেন্দ্র করেই নবান্ন উৎসবের সূচনা হয়। নবান্ন অর্থ- নতুন অন্ন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শস্যোৎসব। নবান্ন হলো নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব, যা সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকার পর এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলে ফসল তোলার পরদিনই নতুন ধানের নতুন চালে ফিরনি-পায়েশ অথবা ক্ষীর তৈরি করে আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর বাড়িতে ডেকে বসিয়ে খাওয়ানো হয়। অনেক জায়গায় নবান্ন উপলক্ষে মেলাও বসানো হয়।
![]()
বিজ্ঞাপন
নবান্ন উৎসব নিয়ে কথা হয় সেতাবগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্রী সাথী রানীর সঙ্গে। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমরা দল বেধে সবাই সবার বাসায় খেয়ে বেড়াতাম। কিন্তু এখন আর সেটা দেখা যায় না। নবান্ন উৎসব আর আগের মতো হয় না। যে যার মতো নবান্ন উৎসব করে থাকে।
![]()
একই কলেজের ছাত্র সাগর রায় ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি ছোট থাকতে নবান্ন উৎসবকে ঘিরে অনেক আনন্দ করেছি। যা বর্তমানে আর সেই আনন্দ পাই না।
আরও পড়ুন
সেতাবগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র তাপস ঢাকা মেইলকে বলেন, বাবা-মার কাছে নবান্ন উৎসবের কথা শুনেছি। আগে অনেক ভালো হতো। নবান্নর দিনে একে অপরের বাসায় খেতে যেত কিন্তু বর্তমানে আমাদের গ্রামে সেটা আর দেখি না। নিজেরাই নিজের মতো এখন নবান্ন উৎসব পালন করে।
![]()
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাদশা ঢাকা মেইলকে বলেন, হেমন্তের ধান কাটা শুরু হলেই আমার মনে ভেসে ওঠে নবান্ন উৎসবের আমেজ। কিন্তু বর্তমানে সেটা আর গ্রাম বাংলায় দেখা যায় না। আমরা ছোট বেলায় দল বেধে একে অপরের বাসায় খেতাম এবং নবান্ন উৎসবকে নতুনভাবেই বরণ করে নিতাম। কিন্তু এখনকার ছেলে মেয়েরা শুধু নামেই জানে নবান্ন উৎসব। আগের মতো তারা আর নবান্ন উৎসবে আনন্দ করতে পারে না।
প্রতিনিধি/এসএস

