মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

রোগীকে জুতাপেটা করে কান ধরে উঠবস করালেন ডাক্তার

জেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২১ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

সিরিয়াল মেনে রোগী দেখছেন না ডাক্তার। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ করলেন রোগী। আর রোগীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে কান ধরে উঠবস করালেন ডাক্তার।

ঘটনাটি শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরা শহরের কাটি আমতলায় ডাক্তার ফয়সাল আহমেদের বাড়িতে ঘটে।


বিজ্ঞাপন


অভিযুক্ত ডাক্তার ফয়সাল আহমেদ বেসরকারি হসপিটাল হার্ট ফাউন্ডেশন অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ারের পরিচালক ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আরএমও।

ভুক্তভোগী রোগী বিউটি বেগম (৫৫) সাতক্ষীরা কলারোয়া থানার শাকদাহ এলাকার মোকাজ্জেল হোসেনের স্ত্রী। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আরও পড়ুন

শিশু মুনতাহা হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল পুলিশ

জানা গেছে, গত ৮ নভেম্বর হার্ট ফাউন্ডেশনে ডাক্তার দেখাতে সিরিয়াল দেন বিউটি বেগম। পরদিন ৯ নভেম্বর দুপুরে চিকিৎসা নিতে প্রথমে হার্ট ফাউন্ডেশনে গেলে সেখানকার কর্মকর্তারা চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। সেখানে দীর্ঘ সময় সিরিয়াল থাকার পর তিনি দেখেন সিরিয়াল ভেঙে অনিয়ম করে ডাক্তার দেখানো হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


অভিযোগ করে এই ভুক্তভোগী বিউটি বেগম বলেন, ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে সমস্যার কথা বলার পর চিকিৎসক আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি চড় থাপ্পড় মারতে থাকেন। পরে মাথার চুলের মুঠি ধরে টানা হেঁচড়া করে পা থেকে জুতা খুলে আমার চোখে, মুখে, কানে ও মাথায় মারেন। এসময় উপস্থিত রোগীদের সামনে আমাকে কান ধরে ওঠবস করান। 

তিনি বলেন, আমার মেয়ে মারপিট থামাতে গেলে ডাক্তার আমার মেয়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেও মারধর করেন। শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি ঘটান।

আরও পড়ুন

নিখোঁজের ২০ দিনেও উদ্ধার হয়নি স্কুলছাত্রী

মাকে বাঁচাতে গিয়ে শ্লীলতাহানির শিকার ওই তরুণী বলেন, আমি আম্মুর ওখানে গিয়ে দেখি তাকে চুলের মুঠো ধরে নিচে নামিয়ে ফেলেছে। আমি বাঁচাতে গেলে আমাকেও মারধর করে খারাপ স্পর্শ করেছে। এসময় ডাক্তার আমাকে ও আম্মুকে জুতা দিয়ে পিটিয়েছে। এসময় ডাক্তার আম্মুকে বলছে- তুই এখানে তিনবার সরি বলবি আর কান ধরে ওঠবস করবি। আম্মু বলছে- আমি তো কোনো অন্যায় করিনি কেন সরি বলব, কান ধরে ওঠবস করব। এ কথা বললেই আবার আম্মুকে জুতা দিয়ে মুখে বাড়ি মেরেছে।  ডাক্তার লাথি মেরে বলেছে- এই ভিখারির বাচ্চারে এখান থেকে সরা। ঘাড় ধরে এখান থেকে বের করে দে।

তিনি আরও বলেন, এসময় আমি ফোনে ভিডিও করলে আমার ফোন কেড়ে নিয়ে রিসেট দিয়ে দেয়। পরে আমার মুখের ওপর ফোন ছুড়ে মারে। এবং ডাক্তারের নির্দেশে আল আমিন নামে এক কর্মচারী আমাদের গলা টিপে ধরে তাড়িয়ে দেন।

আরও পড়ুন

রাসেল ভাইপারের কামড় খেয়ে সাপ নিয়েই হাসপাতলে যুবক

এসব বিষয়ে জানতে হার্ট ফাউন্ডেশন অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ারের পরিচালক ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. ফয়সাল আহমেদের মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।

সাতক্ষীরা সদর ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো. শামিনুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তবে দুপক্ষ মীমাংসার চেষ্টা করছে বলে শুনেছি।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুস সালাম বলেন, লোকমুখে এমন ঘটনা শুনেছি। তবে আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসেনি। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর