ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের বিলনালিয়া গ্রামের ছকিনা বেগম (৭০) আজও সংগ্রামী। ৫০ বছর আগে স্বামী তারা মিয়া মারা যাওয়ার পর, সন্তানরাও একে একে মারা যান। একা হাতে জীবনের চাকা টানতে গিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করেছেন, কিন্তু এখন আর সেসব করতে পারেন না। বয়সের ভারে ক্লান্ত ছকিনা বেগমের একমাত্র চাওয়া—সরকারি ঘর ও ভাতার কার্ড।
ছকিনা বলেন, ‘মানুষের বাড়ি কাজ করে বাঁচতেছি, কিন্তু এই বয়সে আর কুলায় না। এখন ভয়ে আছি, যদি অসুস্থ হয়ে পড়ি, তখন কে আমাকে দেখবে?’
বিজ্ঞাপন
স্বামীর রেখে যাওয়া এক টুকরো জমির ওপর নির্মিত একটি টিনের ছাপরা ঘরে বসবাস করছেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে ঘরটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে—চালের ফুটো দিয়ে পানি পড়ছে, পাটকাঠির বেড়া পচে গেছে।
ছকিনার অভিযোগ, এলাকার অনেক লোক সরকারি ঘর পেয়েছেন, কিন্তু তার কোনো সরকারি সুবিধা নেই। তিনি সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, ‘এই বয়সে আমাকে যদি সরকারি ঘর ও ভাতার কার্ড না দেয়া হয়, তাহলে কীভাবে বাঁচব?’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সাঈদুর রহমান জানিয়েছেন, ‘আমি মেম্বার হওয়ার পর কোনো কার্ড বরাদ্দ পাইনি, তবে শীতকালে ছকিনাকে কম্বল দেওয়া হবে।’
এদিকে তালমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন মিয়া বলেছেন, ‘ছকিনাকে মাঝে মাঝে সহযোগিতা করা হয়। সরকারি ঘর বরাদ্দ পেলে তাকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হবে।’
বিজ্ঞাপন
নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাফি বিন কবির জানান, ‘ছকিনার ঘর মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে এবং কোনো সরকারি ঘর খালি হলে, তাকে দেওয়া হবে। প্রশাসন তার পাশে থাকবে।’
এখন ছকিনার একমাত্র আশ্রয়—সরকারের সহায়তা। তার ভবিষ্যৎ এখন সরকারের উদ্যোগের ওপর নির্ভরশীল।
প্রতিনিধি/একেবি

