দীর্ঘ ৬ বছর ধরে অসুস্থ থাকার পরে ৬ মাসে আগে স্বামী মনির কাজীর অকাল মৃত্যুতে যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে সাবিনা ইয়াসমিন রুবীর ওপর। সংসারের পুরো দায়িত্ব এসে পড়ে রুবীর কাঁধে। তবে দমে যাননি তিনি। শত কষ্টেও চালিয়ে নিচ্ছেন সংসার। পড়াশোনা করাচ্ছেন তিন সন্তানকে। তাদেরকে নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে তার। ঘরবাড়ি না থাকায় সন্তানদের নিয়ে এখন তিনি কোথায় যাবেন, সেই ভাবনা তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাকে।
অসহায় রুবী ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার মগর ইউনিয়নের কাঠিপাড়া গ্রামে তার বাবার বাড়িতে এক চাচতো চাচার ভাঙা ঘরে থাকেন। সেটিও নদী ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে।
বিজ্ঞাপন
সংসারের অনিশ্চয়তার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন সাবিনা ইয়াসমিন রুবী। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ থাকার কারণে সহায়-সম্বল সব কিছু হারিয়ে চিকিৎসা চালাতে হয়েছে। তিনি ৬ মাস আগে মারা যান। বর্তমানে আমার তিনটি সন্তান রয়েছেন। বড় মেয়েটা ঝালকাঠি সরকারি কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী। আর একটা ছেলে নলছিটি মার্চেন্টস্ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। আর ছোট ছেলেটাও স্কুলে পড়ছে। তাদের লেখাপড়া অনেক খরচ। মানুষ যা দেয় তা দিয়ে কোনরকম আমার সংসার চলে তবে লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারছি না। বড় মেয়েটা ও ছেলেটা টাকার অভাবে স্কুল কলেজে যেতে পারছে না। মেয়েটা বড় হয়েছে বিয়ে দেওয়া লাগবে। তাই আল্লাহর ওপর ভরসা করে আছি। আমি কোনো সরকারি সহায়তা পাচ্ছি না। যদি কোনো সহায়তা পেতাম তাহলে কিছুটা হলেও খুব উপকার হতো।
অসহায় রুবীর বাবা ইউসুফ হাওলাদার বলেন, আমার জায়গা জমি সব নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে থাকার মতো একটু ঘর আছে তাও মনে হয় চলে যাবে। আমি কোনরকম গরুছাগল পালন করে সংসার চালাই। আমার পক্ষে আমার মেয়ের সংসার দেখার সম্ভব না। আমার মেয়ের জামাই মারা যাওয়া পরে আমার এক চাচাতো ভাইর ভাঙা ঘরে থাকছেন।
নলছিটির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নজরুল ইসলাম বলেন, চেষ্টা করব তাকে সরকারি সহয়তা দেওয়ার। আর সমাজসেবায় যদি কোটা থাকে তাহলে ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
প্রতিনিধি/এসএস