হাঁপানিসহ বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তির আশায় কবিরাজের কাছে প্রতি পিস কলা ২০০ টাকায় কিনে খেতে এসেছেন শতশত রোগী। কালীপূজার রাতে এ কলা খেলে হাঁপানি রোগ চিরতরে নিমূর্ল হয় এ বিশ্বাসে এক পিস কলা ২০০ টাকায় কিনছেন রোগী ও তার স্বজনরা।
এই চিকিৎসা গ্রামবাসীর কাছে 'কলা চিকিৎসা' নামে পরিচিত। একটি কলা চার টুকরা করে প্রতিজনকে এক টুকরা করে খাওয়ানো হয়। প্রতি টুকরার দাম রাখা হচ্ছে ৫০ টাকা। আর এক পিস কলা ২০০ টাকায় বিক্রি করেন এসব কথিত কবিরাজ।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার কলসনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসানসহ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান।
আরও পড়ুন
জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে ‘কলা চিকিৎসা’ দিয়ে আসছেন স্থানীয় কয়েকজন কবিরাজ। শ্বাসকষ্ট, হাঁপানিসহ নানা ধরনের রোগ থেকে মুক্তির আশায় বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজি মোটরসাইকেলযোগে উপজেলার কলসনগর গ্রামের আবুল কালামের বাড়িতে ভিড় করেন রোগীরা। সেখানে প্রশাসনিক ঝামেলা এড়াতে টাকা নিয়ে গোপনে এই চিকিৎসা দেন কথিত কবিরাজ মিজানুর রহমান। গোপনে ‘কলা চিকিৎসা’ দিচ্ছেন এমন খবর পেয়ে কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলের ভিডিও ও ছবি তুলতে গেলে বাধা প্রদান করেন ওই কবিরাজ ও তার অনুসারীরা। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে পালিয়ে যান কথিত কবিরাজ ও তার অনুসারীরারা।
বিজ্ঞাপন
গত বছরও কথিত এই কবিরাজ মিজানুর উপজলার শালেশ্বর গ্রামে তার দুলাভাই আব্দুল মতিনের বাড়িতে এ চিকিৎসা দেন। পরে উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিত টের পেয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুরুজ্জামান শামীম বলেন, কলার সঙ্গে গাছগাছড়া খেলে শ্বাসকষ্ট রোগ ভালো হয় এমন তথ্য প্রমাণ চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্মত নয়। ভিত্তিহীন এ ধরণের চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষকে প্রতারিত করা হচ্ছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান ঢাকা মেইলকে বলেন, কথিত কিছু কবিরাজ চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে প্রতি পিস কলা ২০০ টাকা করে নিচ্ছেন। এমন খবর পেয়ে আমিসহ পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁচ্ছাই। আমরা ঘটনাস্থলে গেলে কোনো কবিরাজকে পাইনি। ওখানে গিয়ে আমরা স্থানীয়দের বলে এসেছি, পরবর্তীতে যেন এ ধরনের কোনো কার্যক্রম না ঘটে, সেজন্য সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তী এমন কার্যক্রম চালালে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
প্রতিনিধি/এসএস