শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় ধানক্ষেতে কৃষকদের দেওয়া জেনারেটরের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একটি বন্যহাতি মারা গেছে। রাতেই বন বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে জেনারেটরটি জব্দ করেছেন। এ ঘটনায় দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন 'ফিল্ড রিচার্স ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ ওয়াইল্ড এলিফ্যান্ট'।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী বাতকুচি গ্রামে রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: তেঁতুলিয়া নদীতে জেলের জালে কুমির
শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমকে এ বিষয়টি জানিয়েছেন মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম।
বন বিভাগ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে ২৫–৩০টি বন্যহাতির পাল উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের বিভিন্ন টিলায় ও জঙ্গলে অবস্থান করছে। দিনের বেলায় টিলা বা জঙ্গলে অবস্থান করলেও সন্ধ্যা নামার পরপরই হাতির পাল দল বেঁধে ধানক্ষেত ও লোকালয়ে নেমে আসে। এ জন্য কৃষকেরা ফসল রক্ষায় মশাল জ্বালিয়ে, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে হাতির পাল প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন।
বাতকুচি গ্রামের টিলাপাড়া এলাকায় পাহাড়ের ঢালে ৪০–৫০ একর জমিতে আমনের আবাদ করা হয়েছে। ফসল রক্ষায় কৃষকেরা ধানক্ষেতে জেনারেটরের মাধ্যমে তার দিয়ে ঘিরে রাখেন। গতকাল রাতে হাতির পাল সেই ফসল খেতে হানা দেয়। এ সময় একটি হাতি তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। এ সময় অন্য হাতিগুলো মৃত হাতিটিকে ঘিরে রাখে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বন বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে জেনারেটর জব্দ করে নিয়ে যান। আজ শুক্রবার সকালে মৃত হাতিটি রেখে অন্য হাতিগুলো জঙ্গলে ফিরে যায়।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: শিকারীর ফাঁদ থেকে রক্ষা পেল ১৭ ঘুঘু
‘ফিল্ড রিচার্স ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ ওয়াইল্ড এলিফ্যান্ট'-এর পক্ষে আসাদুজ্জামান পৃথিল বলেন, হাতি আমাদের জাতীয় সম্পদ। গারো পাহাড় হাতির আদিভূমি। মানুষ হাতির আদিভূমিতে অনুপ্রবেশকারী। যারা হাতিটিকে নৃশংসভাবে হত্যা করলো, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, জেনারেটরের তারে জড়িয়ে একটি হাতির মৃত্যু হয়েছে। রাতেই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। মৃত হাতির ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/ এমইউ