বরগুনায় মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ায় স্থানীয় সাংবাদিক দৈনিক মানবকণ্ঠ পত্রিকার আমতলী উপজেলা প্রতিনিধি এইচএম কাওসার মাদবরকে কুপিয়ে জখম করার প্রতিবাদে স্থানীয় সাংবাদিকরা মিলে প্রতিবাদ সভা করেন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এই হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে এই প্রতিবাদ সভা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবাদ সভায় সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার স্টাফ রিপোটার মো. জসিম উদ্দিন সিকদারের সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. হোসাইন আলী কাজীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন- আমতলী প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাড. শাহাবুদ্দিন পান্না, সিনিয়র সাংবাদিক খাঁন মতিয়ার রহমান, পরিতোষ কর্মকার, চ্যানেল আমতলীর পরিচালক সাইফুল্লাহ নাসির, আমতলী প্রেসক্লাব সাবেক সভাপতি একেএম খায়রুল বাশার বুলবুল, বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন ফসল, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুহু-উল আলম নবীন, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জয়নুল আবেদীন, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম সাইদ খোকন, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম নাশির মাহমুদ, সাংবাদিক ক্লাবের সভাপতি সুমন রশিদ, বশির আহমেদ, রিপন মুন্সি, সাংবাদিক ফোরাম সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সাংবাদিক সাইদুর রহমান সজিব, মাহবুব বিশ্বাস টিটু, এইচএম রাসেল, মো. ফখরউদ্দিন তহসিন, রাশেমুল হক রিমন ও সাজ্জাদ শরীফ। এসময় বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সেরাজ খাঁন ও আলম মৃধা বলেন, ৬-৭ জন দলের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী সাংবাদিক কাওসার মাদবরকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।
আহত সাংবাদিক এইচএম কাওসার মাদবর বলেন, গত শনিবার বিকেলে কিশোর গ্যাং লিডার ইমরান বিশ্বাস ও রহমান হাওলাদারসহ ৬-৭ জন মাদকসেবী পুর্ব কেওয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভেতরে বসে মাদক সেবন করছিল। আমি তাদের স্কুলে বসে মাদক সেবনে বাধা দেই। এতে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এ ঘটনার জেরে সোমবার রাতে আমি মহিষকাটা বাজার থেকে ওষুধ নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে ইমরান বিশ্বাস ও রহমান হাওলাদারের নেতৃত্বে ৭-৮ জন দলের কিশোর গ্যাং বাহিনী পরিকল্পিতভাবে আমাকে পেছন দিক থেকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আমি এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করছি।
বিজ্ঞাপন
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, আমতলী উপজেলার পুর্ব কেওয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে কিশোর গ্যাং মিলে দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন করে আসায় বিদ্যালয় শিক্ষক ও স্থানীয়রা বারণ করলেও গ্যাং গ্রুপ তা মানছিল না। গত শনিবার বিকেলে ওই বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে কিশোর গ্যাং লিডার ইমরান বিশ্বাস, রহমান হাওলাদার ও তাদের সহযোগীরা মাদকসেবন করছিল। ওই সময় আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচএম কাওসার মাদবর বাধা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ইমরান বিশ্বাস, রহমান হাওলাদার ও তাদের সহযোগীরা মিলে সোমবার রাতে মহিষকাটা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে পুর্ব কেওয়াবুনিয়া স্কুলের সামনে পৌঁছা মাত্রই ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে। এতে তার মাথায় গুরুতর জখম হয়। তার ডাক চিৎকারে লোকজন ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালে চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান খাঁন তার চিকিৎসা দেন। বর্তমানে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
প্রতিনিধি/এসএস
