বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ঢাকা

নদীতে পানি বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত কাঠের সেতু, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

শামীম কাদির, জয়পুরহাট
প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৯ এএম

শেয়ার করুন:

নদীতে পানি বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত কাঠের সেতু, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বড়মানিক এলাকায় ছোট যমুনা নদীর ওপর নতুন সেতু নির্মানের জন্য বিকল্প চলাচলের কাঠের সেতুটি হয়েছে মরণফাঁদ। গত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় তীব্র স্রোতে সেতুটির পিলার ও পাটাতন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও ঝুঁকি নিয়েই চলছে ছোট খাটো যানবাহনসহ হাজার হাজার মানুষ। এতে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এদিকে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

প্রোগ্রাম ফর সাপোটিং রুরাল ব্রিজেজ কর্মসুচির আওতায় ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বড়মানিক এলাকার ৩৪০ মিটার চেইনেজ ৯০.০৬ মিটার দীর্ঘ গ্রার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৮ কোটি ৫৭ লাখ ১১ হাজার ৭৭২ টাকা ব্যয়ে কাজটি শুরু করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড ও এমডি সোহেল জেভি। কাজটি শেষ হওয়ার কথা ২০২৫ সালের ৮ জুলাই। এজন্য পুরাতন সেতুটি ভেঙে দিয়ে হাজার হাজার মানুষের চলাচলের জন্য পাশে বিকল্প কাঠের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। তবে গত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীর পানির চাপে কাঠের সেতুটির কয়েকটি খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া উপরের কাঠের পাটাতনও কিছু অংশ দেবে গেছে। কর্তৃপক্ষ যানচলাচল নিষিদ্ধ করলেও বাধ্য হয়ে চলছে সাধারণ মানুষ ও সাধারণ ছোট যানবাহনগুলো। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। কোন দুর্ঘটনা ঘটার আগেই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি চলাচলকারীদের।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_Joypurhat_Jukipurno_Bridge_Pic_(2)

করিয়া গ্রামের অটোচালক মাহমুদুল হাসান রিপন বলেন, নদীতে পানি বাড়ার কারণে কাঠের সেতুর কিছু অংশের ক্ষতি হয়েছে। এজন্য এই সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। আমরা যাত্রীকে নেমে দিয়ে শুধু গাড়ি নিয়ে পার হচ্ছি। না হলে প্রায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হবে। এটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।

ধরঞ্জীগ্রামের মোটরসাইকেলের চালক এনামুল হক বলেন, গত কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে নদীতে পানি বেড়েছে। একারণে পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পাটাতন বাঁকা হয়ে গিয়েছে। যে কোনো সময় এটি ধসে পড়তে পারে। এজন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করবো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

মালিদহ গ্রামের অটোযাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, পানি বাড়ার কারণে সেতুটির ভয়াবহ অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। এই সেতু দিয়ে যাত্রী নিয়ে কোনো যানবাহন যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে আমরা নেমে হেঁটে যাচ্ছি। আমার এক আত্মীয়কে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে আসলাম। সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভেঙে পড়তে পারে।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_Joypurhat_Jhukipurno_Bridge_pic_2

পাঁচবিবি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী আরিফা বলেন, আমি এই পথ দিয়ে কলেজে যাই। আমার মতো এমন হাজারো শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা অনেক ভয়ের মধ্যে পারাপার হচ্ছি।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি নুর ইসলাম পলাশ বলেন, বিকল্প কাঠের সেতুটি সেঙ্গেল করার কথা ছিল কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এটি ডাবল করা হয়েছে। এক দিক দিয়ে আসবে, এক দিক যাবে। কিন্তু হঠাৎ নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ার কারণে স্রোতের মধ্যে গাছের গুল, পলী, কচুরিপানা এই সেতুতে ধাক্কা খাওয়ায় একটু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এজন্য মানুষ চলাচলে একটু বিঘ্ন হচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়াতে মাইকিং করা হচ্ছে। আমরা সংস্কার কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছি। পানি বেশি থাকার কারণে কাজ দ্রুত করা যাচ্ছে না। পানি কমে গেলে কাজ শেষ করতে পারবো।

এলজিইডির পাঁচবিবি উপজেলা প্রকৌশলী সামিন শারার ফুয়াদ বলেন, আমরা সেতুটি পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সতর্কতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সেতুটির সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া জনগনের দাবির মুখে সেখানে একটি বেইলি সেতু করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর