শারদীয় দুর্গাপূজা আর সাপ্তাহিক বন্ধকে সামনে রেখে আগামী ১০-১৩ অক্টোবর পর্যন্ত চারদিন সরকারি ছুটিকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে কুয়াকাটার পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে অগ্রীম বুকিং হয়ে গেছে ৭০ শতাংশ হোটেল।
কুয়াকাটা হোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ জানান, চলতি সপ্তাহে দুর্গাপূজা আর সাপ্তাহিক ছুটি মিলে ৪ দিনের লম্বা ছুটিতে কুয়াকাটায় থাকা প্রথম শ্রেণির আবাসিক হোটেলের প্রায় শতভাগ আর ছোট-বড় আবাসিক হোটেলের প্রায় ৭০ শতাংশ হোটেল কক্ষ অগ্রীম বুকিং হয়েছে। আগত পর্যটকদের বরণে এরইমধ্যে প্রস্তুত হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ফিসফ্রাই, আচার ঝিনুক, বারমিজ ব্যবসায়ীসহ মোট ১৬টি পেশার প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক।
বিজ্ঞাপন
হোটেল বেস্ট সাউদার্নের পরিচালক সালমান রাব্বি বলেন, আমাদের হোটেলে থাকা ৩১টি কক্ষ শুক্রবার-শনিবার শতভাগ এবং বাকি দুইদিন ৭০-৮০ শতাংশ বুকিং হয়েছে। এখনও অনেক ফোন আসছে কিন্তু আমরা রুম দিতে পারছি না।
দেশের একমাত্র সমুদ্র সৈকত যেখানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত উপভোগ করতে সারাবছর দেশ-বিদেশের পর্যটকরা এখানে বেড়াতে আসেন। বছরের অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পর্যটন মৌসুম হিসেবে ধরা হলেও পদ্মাসেতু চালুর পর সারাবছরই পর্যটকে মুখর থাকে কুয়াকাটা। প্রতিবছর পর্যটকদের আগমনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও রাস্তাঘাট নামেমাত্র মেরামত আর সৈকতে জোড়াতালি দিয়েই চলছে কুয়াকাটার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির কাজ। মহাপরিকল্পনার নামে কুয়াকাটাকে নিয়ে হাজার কোটি টাকা বাজেটের গল্প বছরের পর বছর কুয়াকাবাসী শুনে আসলেও দেখা মেলেনি কোনো পরিকল্পনারই।
রাহিম সারওয়ার নামে এক পর্যটক জানান, গত ১০ বছর যাবৎ তিনি কুয়াকাটায় আসেন বছরে একবার। কিন্তু প্রতিবছরই সৈকত ছোট হচ্ছে, আর অপরিচ্ছন্ন হচ্ছে। তবে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের ধরে রাখতে হলে সৈকতকে নান্দনিক করার কোনো বিকল্প নেই। দিনদিন সৈকত সৌন্দর্য বিনষ্ট হচ্ছে, সৈকতের সৌন্দর্য বাড়াতে হবে।
বিজ্ঞাপন
কুয়াকাটার সৌন্দর্য নষ্টে শুধু যে পর্যটক মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে এমনটাও নয়, প্রতিনিয়ত এভাবে সৌন্দর্য নষ্ট হলে একসময় কুয়াকাটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বসে থাকা ব্যবসায়ীরাও।
হোটেল ডি-মোর কুয়াকাটা পরিচালক জয়নুল আবেদিন জুয়েল ঢাকা মেইলকে বলেন, প্রতিবছর কুয়াকাটায় পর্যটক বাড়ছে, যার ওপর নির্ভর করে আমরা হাজার হাজার কোটি টাকা কুয়াকাটায় বিনিয়োগ করছি। তবে সরকারের গাফিলতিতে যদি কুয়াকাটা সৌন্দর্য হারায় তাহলে আমাদের এই হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা বিফলে যাবে। তাই কুয়াকাটাকে সংস্কার করা এখন সময়ের দাবি।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের পুলিশ সুপার, মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ঢাকা মেইলকে জানান, লম্বা এই ছুটিকে কাজে লাগিয়ে কুয়াকাটায় বাড়তি চাপ সামলাতে ট্যুরিস্ট পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ সম্মিলিতভাবে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।
প্রতিনিধি/ এজে

