শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

পানির তোড়ে সাঁকো ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নে ১০ গ্রামের মানুষ

জেলা প্রতিনিধি,  রংপুর
প্রকাশিত: ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৪ পিএম

শেয়ার করুন:

পানির তোড়ে সাঁকো ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নে ১০ গ্রামের মানুষ

কয়েকদিনের টানা ভারি বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারনে তিস্তা নদীতে বেড়ে যায় পানি। সেই বেড়ে যাওয়া পানির তোড়ে কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনয়নের মৌলভীবাজার এলাকার একটি সংযোগ সড়কের দুইপাশ ভেঙে গেছে। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে পরেছে ১০ গ্রামের মানুষ। 

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। যোগাযোগ বিচ্ছিনের কারনে কাউনিয়ার বালাপাড়া, শহীদবাগ, হারাগাছের প্রায় ১০ হাজার পরিবার দুর্ভোগে পড়েছে। বানভাসি এসব মানুষের একেবারে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে।


বিজ্ঞাপন


এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নে ইউএসএ আইডির অর্থায়নে ও কেয়ার বাংলাদেশের সহযোগিতায় চরাঞ্চলের প্রান্তিক মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে ২০১০ সালে ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের ৫ বছর পর বন্যার পানির তোড়ে নির্মিত সেতুর দুইপাশের সংযোগ সড়কের মাটি ধসে পরে বিলিন হয়ে যায়।

পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সেতুতে উঠতে সংযোগ সড়কের বিকল্প হিসেবে সেতুর দুই প্রান্তে তৈরি করা হয় বাঁশ ও কাঠের সাঁকো। সেতু দিয়ে প্রতিদিন গোপীডাঙ্গা, আরাজী খোর্দ্দ ভূতছাড়া, মৌলভীবাজারসহ প্রায় ১০ গ্রামের লোকজন বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। 

এছাড়াও লালমনিরহাটের রাজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতের ভরসা এই সেতুটি। সেতুটির দুই প্রান্তের মাটি ধসে পড়ায় ঝুকি নিয়েই পাড়াপার করতো পার্শবর্তী কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা। এবারের বন্যায় সেই বাশ ও কাঠের তৈরী সাকোও ভেঙ্গে গেছে। ফলে বিপাকে পরেছে১০ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার।

স্থানীয়রা জানান, সেতুর সংযোগ সড়ক ভাঙ্গার কয়েকবছর হলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন। এমন অবস্থায় সেতুতে উঠতে বাঁশ ও কাঠের সাঁকো ব্যবহার করে আসছিলো স্থানীয় লোকজন। সেটিও এবারের বন্যায় ভেঙ্গে গেছে। সেতুটির সাথে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে চলাচল উপযোগী করার জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগি স্থানীয়রা।


বিজ্ঞাপন


গোপীডাঙ্গা গ্রামের মোহাম্মদ আলী বলেন, কি আর কমো বাহে। ব্রীজ আছে, কিন্তু চলাচল করিবার পাই না। হামার ভাগ্যই খারাপ। কেউ খোঁজ নেয় না। ব্রীজখান যে ঠিক করা নাগবে কারো মাথাত নাই। কষ্টো থাকি গেলো। 

মৌলভীবাজার গ্রামের বাসিন্দ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এখন তো হামরা বিচ্ছিন্ন হয়া পরছি। কোনপাকে যাবার পাইচোল না। সবায় আইসে, দ্যাকে আর যায়, কোন ফল পাইচোল না।’ এমন দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আরো কয়েকজন কষ্টের কথা জানান এই প্রতিবেদককে।

সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউনিয়া উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জেমি জানান, সেতুটির বিষয়ে আমরা এরই মধ্যে সরেজমিন সার্ভে করেছি, গত কয়েক দিনের বন্যার কারনে পানির শ্রোতে ভেঙ্গে গেছে কাঠ বাশের তৈরী সাকোঁ। বিষয়টি আমরা অবহিত। আগামী সপ্তাহে ঢাকা থেকে একটি টিম আসবে নতুন ব্রীজ নির্মাণের জন্য যত দ্রুত সম্ভব অর্থ বারদ্দ সাপেক্ষে সেতুটি নির্মাণ করা।

syy

এ বিষয়ে কাউনিয়ায়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হক জানান, বিষয়টি অবহিত হয়েছি। এর আগে এই বিষয়ে ঢাকায় জানানো হয়েছিলো। তাই আগামী ১০ অক্টোবর একটি টীম পরিদর্শনে আসবে। যদিও সেতৃ নির্মাণ সময়সাপেক্ষ। পানি কমলেই সম্প্রতি বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়া বাঁশের সেতুটি আবারো এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে নির্মাণ করে দেয়া হবে। যাতে এলাকাবাসী চলাচল করতে পারে।

প্রতিনিধি/একেবি

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর