বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা

রামগতিতে ভুলুয়া নদীর অবৈধ বাঁধ অপসারণ

জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর
প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৪ পিএম

শেয়ার করুন:

রামগতিতে ভুলুয়া নদীর অবৈধ বাঁধ অপসারণ

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার আজাদনগর ব্রিজ এলাকায় অবৈধ বাঁধ অপসারণ করে ভুলুয়া নদীতে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে সেচ্ছাশ্রমে কাজ করছে হাজারও জনতা।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ এসে একসঙ্গে এ বাঁধ অপসারণে কাজে সামিল হন।


বিজ্ঞাপন


মানবসৃষ্ট বন্যা রোধে ভুলুয়া নদীতে থাকা অবৈধ বাঁধ অপসারণে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বাস্তবায়নে রামগতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আবদুল্লাহ বিন শফিকের নেতৃত্বে স্বেচ্ছায় কাজ করতে নেমেছেন জনতা। এ সময় জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিটকারী সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও কমলনগর উপজেলার বাসিন্দা আবদুস সাত্তার পালোয়ান উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার ভুলুয়া নদী সংশ্লিষ্ট এলাকায় টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা ও পরে বন্যার পানিতে প্রায় ৩ লাখ মানুষ দুই মাস ধরে দুর্ভোগ রয়েছে। ধীর গতিতে পানি কমলেও কাটছে না মানুষের দুর্ভোগ। এখনও অধিকাংশ মানুষের বাড়ি কোমর পানিতে বন্দি হয়ে রয়েছেন। ৪০ দিনেরও বেশি সময় ধরে মাটির চুলায় রান্না করা সম্ভব হচ্ছে না। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অধিকাংশ মানুষ শুকনো খাবার খেয়েই জীবন যাপন করে আসছে।

জানা গেছে, বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সাত্তার পালোয়ান মানবসৃষ্ট বন্যা রোধে ভুলুয়া নদীসহ লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর সকল খাল থেকে অবৈধ বাঁধ অপসারণ চেয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর ভুলুয়া নদীসহ সকল খাল দখলে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এতে ভুলুয়া নদীতে অবৈধ দখলের ঘটনা তদন্ত ও অবৈধ বাঁধ অপসারণে সময় বেঁধে আদেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অবৈধ দখলের ঘটনায় তদন্ত শুরু করতে হবে। তদন্তপূর্বক ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে দখল উচ্ছেদ করে ভুলুয়া নদীর পানি প্রবাহ নিশ্চিত করে হাইকোর্টকে প্রতিবেদন দিতে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, গত ২ মাস ধরে তারা পানিবন্দি। এ পানির কারণে তাদের অনেক ভোগান্তি ছিল। আজকে সবাই মিলে ভুলুয়া নদীর অবৈধ বাধ কেটে দিয়েছেন। এতে তারা আনন্দিত ও ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেল।


বিজ্ঞাপন


অ্যাডভোকেট সাত্তার পালোয়ান বলেন, প্রায় দুই মাস ভুলুয়া নদী এলাকায় প্রায় ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। বন্যার পানি কমবে কি না তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এজন্য প্রথমেই ভুলুয়া নদী থেকে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তদন্ত শেষে নদী থেকে অবৈধ বাঁধ অপসারণের জন্য ১০ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে হাজারও মানুষ অবৈধ বাঁধ অপসারণে কমলনগর থেকে রামগতি এসে কাজ করছে। মানুষজন পানিতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এ দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে মানুষ মরিয়া হয়ে উঠেছে। ভুলুয়া নদী খননের জন্য একটি প্রকল্প দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানাচ্ছি।

রামগতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আবদুল্লাহ বিন শফিক বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা ভুলুয়া নদীতে থাকা অবৈধ বাঁধসহ পানি প্রবাহে বাঁধসৃষ্টিকারী বস্তু অপসারণে এসেছি। এখানে আমাদের সঙ্গে স্বেচ্ছায় কাজ করতে বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। এ এলাকার বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় অবৈধ বাঁধ অপসারণ বড় ভূমিকা রাখবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার মধ্য দিয়ে মেঘনা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ভুলুয়া নদীর লক্ষ্মীপুর অংশের দৈর্ঘ্য ৭৬ কিলোমিটার। জলাধারটি আগে গড়ে ৩০০ মিটার চওড়া হলেও এখন কমে গড়ে ১০০ মিটার হয়ে গেছে।

প্রতিনিধি/ এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর