মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

বন্যাদুর্গত কৃষকদের জন্য ধানের বীজ বপন করল ‘দুর্বার’

উপজেলা প্রতিনিধি, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩২ পিএম

শেয়ার করুন:

বন্যাদুর্গত কৃষকদের জন্য ধানের বীজ বপন করল ‘দুর্বার'

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় মিরসরাই উপজেলায় কৃষিখাতে অনেক ক্ষতি হয়েছে। বলা চলে সে ক্ষতিতে কৃষকদের হাত মাথায় উঠেছে। জলের বানে ডুবে গেছে আমন ধানের বীজতলা। কৃষকদের এরূপ দুশ্চিন্তায় পাশে দাঁড়ালেন মিরসরাইর স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংঘঠন দুর্বারের সদস্যরা।

thumbnail_Mirsarai_Durbar_Photo_(1)


বিজ্ঞাপন


‘দুর্যোগে ঐক্য গড়ি, কৃষিতে স্বপ্ন বুনি’ স্লোগানে উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নে ২৫ শতক জমিতে তৈরি করেন বীজতলা। জমি চাষ থেকে শুরু করে, পানি সেচ ও জমির আইলও করেন তারা। এরপর নামেন প্রতি আলে ধানের বীজ ছিটাতে। দেখে মনে হচ্ছে তারা কৃষি বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাদের এ বপনকৃত ধান বীজ থেকে উৎপাদিত ধানের চারা কৃষকরা ৫ একর জমিতে লাগাতে পারবেন। বিআর-২২ জাতের ষাট কেজি ধানের বীজ বপন করেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে এ ধানের চারাগুলো বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। সমাজ উন্নয়ন সংস্থা দুর্বার প্রগতি সংগঠন ও কৃষি উন্নয়ন সংগঠন পত্র-পল্লব যৌথভাবে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

thumbnail_Mirsarai_Durbar_Photo_(2)

দুর্বারের এ কৃষি উদ্যোগ দেখতে আসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা জেরিন। এসময় তিনি বলেন, এবারের বন্যায় আমাদের কৃষিতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে। কৃষকদের আমন ধানের বীজ তলা নষ্ট হয়ে গেছে। দুর্বারের নিজস্ব উদ্যোগে কৃষকদের বিন্যামূল্যে ধান ও চারা বিতরণ আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে সামান্য হলেও অবদান রাখবে।

আরও পড়ুন

চট্টগ্রামে বন্যায় এক লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, কৃষি ও কৃষকদের কল্যাণে দুর্বাররের এ উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ আমন চাষি কিছুটা হলেও উপকৃত হবে তাদের এ উদ্যোগ থেকে।

Mirsarai_Durbar

সংগঠনের সভাপতি রিপন কুমার দাশ ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে আমরা আগাম শীতকালিন সবজির চারা বিতরণ করব। যাতে কৃষকদের ক্ষতি কিছুটা লাঘব হয়। ৫০ জন দুর্বার স্বেচ্ছাসেবী টানা ১০ দিন এ বিশাল কর্মযজ্ঞে স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন এবং সংগঠনের সদস্য, পৃষ্ঠপোষক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা আর্থিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

Mirsarai_Durbar_Photo_(5)

উল্লেখ্য, গত ২১ আগস্ট থেকে বন্যায় মিরসরাইতে ফেনী নদীর পানি বাড়তে থাকলে পানিবন্দী পড়ে শত শত মানুষ। চারদিকে যখন বাড়ছে পানির স্রোত। বাঁচার আকুতিতে যখন ভারি হয়ে উঠছে আকাশ-বাতাস। একে অপরের সঙ্গে যখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আর দেরি না করে দুর্বার রেসকিউ টিম ২২, ২৩ ও ২৪ আগস্ট চারটি উদ্ধারকারী বোট ও পিকাপ নিয়ে ছুটে যান ফেনীর নিজকুঞ্জরা পিএইচপি কারখানার সামনে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্ব পাশে ও মিরসরাইয়ের শান্তির হাট, গোলকের হাট, নাহেরপুর, ওচমানপুর, আবুরহাট কাজীগ্রাম , লুদ্দাখালী, এছাক ড্রাইভার হাট ও ঝুলনপোল এলাকায়। স্রোতের তীব্রতা ও গলা পানি উপেক্ষা করে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে তিন রাতদিন প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে প্রায় দুই শতাধিক পানিবন্দী মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেন দুর্বারের সদস্যরা। মিরসরাইয়ের মিঠানালা, কাঁটাছড়া, ওচমানপুর, দূর্গাপুর,  ধুম, মঘাদিয়া ও ইছাখালী ইউনিয়নের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত মানুষ ও দুর্গত এলাকায় পানিবন্দী প্রায় ৫ হাজার মানুষের মাঝে রাত ও দুপুরের খাবার, শুকনা ও ভারি খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্যালাইন ও ওষুধ বিতরণ করে দুর্বার।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর