মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

বন্যায় অসহায় পরিবারের পাশে শান্তিনীড়

উপজেলা প্রতিনিধি, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

বন্যায় অসহায় পরিবারের পাশে শান্তিনীড়

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের প্রায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এমন অবস্থায় সব ধরণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় অনেকেই আত্মীয়স্বজনদের খোঁজ নিতে পারছেন না। চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় কেটেছে প্রায় চার-পাঁচদিন।

আরও পড়ুন

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত  ৯৫০ পরিবারকে ৭ দিনের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ 

ঠিক তখনই মিরসরাইয়ের স্বেচ্ছাসেবী সমাজ উন্নয়ন সংস্থা শান্তিনীড়ের সদস্যরা ফেনী ও মিরসরাইয়ের পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধারের পাশাপাশি তাদের মাঝে খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছেন।

thumbnail_Mirsarai_Santineer_Photo_(2)

জানা গেছে, গত ২১ আগস্ট থেকে ফেনী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ও ভারী বর্ষণের কারণে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর ও মিরসরাই উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, ধুম ইউনিয়নসহ ১১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাড়িঘর প্লাবিত হয়। পানিবন্দী হয়ে থাকা হাজার হাজার মানুষ। তখন উপজেলার শান্তির হাট, গোলকের হাট, নাহেরপুর, ওচমানপুর, আবুরহাট কাজীগ্রাম, লুদ্দাখালী, এছাক ড্রাইভার হাট, ঝুলনপোল ও ছাগলনাইয়া উপজেলার মুহুরীগঞ্জ, লাঙ্গলমোড়া, হাজারীপুকুর, করৈয়া, পাত্তারপুকুর, খাইয়ারা এলাকায় স্রোতের তীব্রতা ও গলাসমান পানি উপেক্ষা করে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে প্রায় দুই শতাধিক পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধার করে তাদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছেন শান্তিনীড়ের সদস্যরা।

thumbnail_Mirsarai_Santineer_Photo_(3)


বিজ্ঞাপন


সংগঠনের দুস্থ ও ত্রাণ সম্পাদক আবু সায়েদ জানান, স্বেচ্ছাসেবী সমাজ উন্নয়ন সংস্থা শান্তিনীড়ের সদস্যরা জীবন বাজি রেখে পানিবন্দী দুই শতাধিক মানুষকে উদ্ধার করে। এরপর বন্যায় আশ্রিত ও পানিবন্দী মানুষদের শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্যালাইন ও ওষুধ সরবরাহ করি। এ পর্যন্ত মিরসরাইয়ের হিঙ্গুলীর আজম নগর, গনকছরা, জামালপুর, ধুমের শান্তিরহাট, গোলেকারহাট, মিনাবাজার, শুক্কুরবারিয়ারহাট, উত্তর মোবারকঘোনা চরাঞ্চল, আদর্শগ্রাম, মৌলভী বাজার, ওচমানপুরের পাতাকোট গ্রামের কর্মকারপাড়া, নাথপাড়া, জেলেপাড়া। ফেনী জেলার মুহুরীগঞ্জ, লাঙ্গলমোড়া, হাজারীপুকুর, করৈয়া, পাত্তারপুকুর, খাইয়ারা, চরকালিদাসসহ বিভিন্ন এলাকা প্রায় ৩/৪ হাজার মানুষের মধ্যে রাত ও দুপুরের খাবার, শুকনো খাবার, পানি, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী, গামছা, ওষুধ বিতরণ করে শান্তিনীড় পরিবার।

thumbnail_Mirsarai_Santineer_Photo_(4)

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শান্তিনীড়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, এই ভয়াবহ বন্যায় শান্তিনীড়ের বেশির ভাগ সদস্যদের ঘর বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। এরপরও সমাজের অসহায় মানুষকে শুরু থেকে শান্তিনীড়ের সদস্যরা উদ্ধার কার্য, ত্রাণ দেয়ায় নিজেদের রাত দিন নিয়োজিত রেখেছেন। শুধু মিরসরাই নয় পার্শ্ববর্তী ফেনী জেলায়ও উদ্ধার এবং ত্রাণ বিতরণের কাজ করে যাচ্ছেন শান্তিনীড়। এখন বন্যার পানি নেমে গেছে এখন আমরা সমাজের অসহায় মানুষের পুনর্বাসনে কাজ শুরু করেছি। সংগঠনের সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাদের ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের তালিকা প্রণয়ন করতেছে। এরপর তালিকা অনুযায়ী তাদের জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। শুকনো বা নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার বিতরণ, ঘরবাড়ি সংস্করণ, ধান বীজের ব্যবস্থা করতেছি। এছাড়া মানবতার দেয়াল তৈরি করে কাপড় বিতরণ, বিভিন্ন মেডিকেল টিমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছেন শান্তিনীড়। আমাদের বিশাল কর্মযজ্ঞে স্বেচ্ছায় শ্রম ও আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন সংগঠনের তরুণ সদস্য, পৃষ্ঠপোষক ও শুভাকাক্ষীরা।

thumbnail_Mirsarai_Santineer_Photo_(6)

তিনি আরও বলেন, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার এই দুর্যোগের মুহূর্তে আমরা খুব বেশি শুন্যতা অনুভব করছি মিরসরাইয়ের স্বেচ্ছাসেবীদের তরুণ নেতা আমাদের প্রয়াত সভাপতি আশরাফ উদ্দিনের। শুধু আমরা নয় পুরো মিরসরাই আজ আশরাফ উদ্দিনের শুন্যতা অনুভব করছে বলে আমি মনে করি। তিনি বেঁচে থাকলে আমরা এই দুর্যোগে মুহূর্তে আরো সাহস পেতাম।

thumbnail_Mirsarai_Santineer_Photo_(5)

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন জানান, এবারের বন্যায় অনেকগুলো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তৎপরতা খুবই প্রশংসনীয়। তারা পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধার, ত্রাণ সহায়তা, চিকিৎসাসেবা প্রদানে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শান্তিনীড়। আমি তাদের সফলতা কামনা করছি।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর