মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ

অর্থাভাবে চোখ হারানোর শঙ্কায় তাইজুল

জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল
প্রকাশিত: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৫ পিএম

শেয়ার করুন:

অর্থাভাবে চোখ হারানোর শংকায় তাইজুল

দৃষ্টি শক্তি হারানোর শঙ্কায় আছেন বরিশালের চরামদ্দী খান ফজলে রব চৌধুরীর সিনিয়র আলিম মাদরাসার শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ তাইজুল ইসলাম সাব্বির (২৭)। বর্তমানে তিনি ঢাকার কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে তিনি বরিশালের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিলেন। 

যার ধারাবাহিকতায় প্রতিদিনের মতো গত ৪ আগস্টও বরিশাল নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোড সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন। একপর্যায়ে ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এই সুযোগে দুর্বৃত্তরা আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। 


বিজ্ঞাপন


এ সময় দুর্বৃত্তদের ছোড়া ২২টি গুলি তাইজুলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিদ্ধ হয়। এরমধ্যে একটি গুলি তাইজুলের বাম চোখের ভেতর বিদ্ধ হয়। যা এখনো বহন করে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে তাইজুল।

তাইজুল শিক্ষার পাশাপাশি বরিশাল রোলার স্কেটিং ক্লাবের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। সে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দী ইউনিয়নের পশ্চিম চরামদ্দী গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। তার বাবা পেশায় একজন মুদি দোকানী।

আহত তাইজুল বলেন, ঘটনার পরপরই সাথের অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চোখের অবস্থা খারাপ দেখে চিকিৎসকরা শরীরের কোনো অংশের গুলি না উঠিয়ে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে প্রেরণ করে। ৫ আগস্ট ভোরে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি হই। ওদিকে ঐদিনই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে চিকিৎসা ব্যবস্থার হযবরল অবস্থা হয়। কোন চিকিৎসা ছাড়াই চোখে শুধু সেলাই করে পরদিন ৬ আগস্ট সকালে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করলে তারা জানায় যে গুলিটি চোখের অনেক ভিতরে চলে গেছে। যা এখানে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। এজন্য দেশের বাহিরে যেতে হবে।

তাইজুল আরও বলেন, আবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায় পরিবারের সদস্যরা। সেখানে ভালো কোনো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে চলে আসি। কোনো চিকিৎসা না পেয়ে এখন চোখের অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছি।


বিজ্ঞাপন


জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক প্রফেসর ডা. নিশাত পারভীন বলেছেন, তাইজুলের চোখের গুলিটা অনেক ভিতরে ঢুকে গেছে। এখন তার রক্ষা করতে হলে তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে হবে। বিদেশে এ চিকিৎসার জন্য নিতে হলে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন।

এদিকে এতো খরচ বহন করা তার দরিদ্র পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানান তাইজুল।

লুৎফর রহমানের আকুতি বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার যেন তার সন্তানের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করে সুস্থ তাইজুলকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন। সমাজের বিত্তবানদেরও তার সন্তানের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছেন তিনি।

প্রতিনিধি/একেবি

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর