সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় এবার সিগারেট 

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২২, ০৮:২৭ পিএম

শেয়ার করুন:

মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় এবার সিগারেট 
ছবি: ঢাকা মেইল

আসন্ন প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনার আগেই বেড়ে গেছে সব ধরনের সিগারেটের দাম। ফলে ধূমপায়ীদের এখন থেকেই সিগারেট কিনতে বেশি খরচ করতে হবে। সব ধরনের সিগারেটে শলাকা প্রতি ১-২ টাকা বেড়েছে।

আগে প্রতি শলাকা যে বেনসন সিগারেট প্রতি পিস ১৫ টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা বেড়ে ১৬-১৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর গোল্ডলিফ, ক্যাপস্টেন এক টাকা বেড়ে ১২ টাকায় প্রতি শলাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ষ্টার ৮ টাকা এবং পাইলট, ডার্বি, রয়েল প্রতি শলাকা বিক্রি হচ্ছে এক টাকা বেড়ে ছয় টাকায়। খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, চাহিদা মতো সিগারেট মিলছে না। ডেলিভারি কম দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ক্ষুব্ধ ক্রেতা সাধারণ।


বিজ্ঞাপন


সোমবার (২৩ মে) মৌলভীবাজার শহরের বিভিন্ন খুচরা দোকান ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

শহরের সেন্ট্রালরোডের সিগারেট বিক্রি করেন নারায়ণ গোয়ালা। তিনি বলেন, 'সিগারেটের সংকট চলছে। হঠাৎ করেই কমে গেছে সরবরাহ। আমার দোকানে প্রতিদিন যে সিগারেট ১০ প্যাকেট রাখতাম, এখন কোম্পানির গাড়ি সেই সিগারেট ২ প্যাকেট দিচ্ছে।'

খুচরা সিগারেট ব্যবসায়ী আহাদ জানান, পাইকারি বাজার থেকে আগে দুই হাজার টাকার সিগারেট নিয়ে আসতাম। অথচ আমাকে আজ আট শত টাকার সিগারেট দিয়েছে তাও আবার বাড়তি দামে।

এদিকে বাজেটের আগে সিগারেটের দাম বাড়াতে ক্ষুব্ধ ধূমপায়ীরা। সিগারেটের এক ভোক্তা নুরুল ইসলাম বলেন, 'সবারই জানেন সিগারেটের দাম বাজেটের পর বাড়বেই। ইচ্ছা করেই এখন সংকট তৈরি করা হচ্ছে। এ যেনো দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় নিজেকে শামিল করা।


বিজ্ঞাপন


কোর্টরোড এলাকার একটি সিগারেটের টং দোকানের পাশে দাঁড়ানো একজন ক্রেতা ফয়সাল মিয়া রসিকতার সুরে বলেন, 'তেলের মতো সিগারেটেও সিন্ডিকেটের শিকার। একটি বার যদি কোন পণ্যের দাম বাড়বে তা প্রকাশ পায়, তবেই হলো। যে যার মতো স্টক করার পাঁয়তারা করবে।'

'আমি রিতিমত ক্ষুব্ধ। খেয়াল করুন সিগারেটের ব্যবহারকারীর অধিকাংশ নিম্ন আয়ের লোক। তাদের উপর আর্থিক চাপ পড়বে। ১৫ টাকার বেনসন ২০ টাকায় কিনলেও সেই ইউজারের গায়ে লাগবে না, কারণ তাদের সংখ্যা কিন্তু স্বল্প।' বলেল বেসরকারি চাকুরিজীবী রাসেল খাঁন।
প্রতিবছর বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়ানো হয় যাতে মানুষ কম সিগারেট খায়। আসলে তাতে কি কাজের কাজ কিছু হয়, আমার মনে হয় না, যারা নিয়মিত ভাবে খায় তারা দাম বাড়ালে একটু কষ্ট পায়, পরে ঠিকই মানিয়ে নেয়। যত টাকা লাগুক তারা সিগারেট চায়। আমি নিজে সিগারেট খাইনা, আমার পরিচিত অনেকে খায়। প্রতি বছর দাম বাড়ছে তাতে কাউকে কম খেতে  দেখছি না। জানান, সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট এলাকার আব্দুল আহাদ।

তবে সিগারেট সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর দাবি, তারা নিয়মিত সিগারেট সরবরাহ করছেন। বাজেটের পর বাড়তি দাম পাওয়া যাবে এই আশায় সিগারেট লুকিয়ে রাখছেন খুচরা বিক্রেতারা। তারাই বাজারে তৈরি করছেন কৃত্রিম সংকট।

কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দু’দিন ধরে কোম্পানি থেকে চাহিদা অনুযায়ী মাল সাপ্লাই হচ্ছে না। তবে এখনো কোন ব্যান্ডের সিগারেটের দাম বৃদ্ধি হয়নি।

সচেতন মহল মনে করেন, ধুমপানের ক্ষতিকর প্রভাব জেনেও মানুষ এতে আকৃষ্ট হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির প্রথম দিকে ধুমপায়ীরা কম খেলেও পরে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। সিগারেটের প্যাকেট কিনতে টাকার প্যাকেটটা একটু বেশি ফাঁকা হচ্ছে। তবুও ধুমপায়ীরা খাচ্ছেন, তাই সরকার সিগারেটে ভ্যাট বাড়ানোর পাশাপাশি অন্য চিন্তা করা উচিত।

এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর