উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টির কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্দরের সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি ইমিগ্রেশন ভবনে হাঁটুপানি জমায় যাত্রী পারাপার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আজ সকাল থেকেই পানিতে ডুবে যায় আখাউড়া স্থলবন্দর। তলিয়ে যায় স্থলবন্দরের সড়কটি। এতে পণ্য আমদানি রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এছাড়া আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ভবনেও পানি ঢুকেছে। ফলে যাত্রী পারাপার কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্থলবন্দর সড়কের পাশে আমদানি-রফতানিকারকদের বেশ কয়েকটি অফিসও তলিয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যায় আখাউড়া উপজেলার বীরচন্দ্রপুর গ্রামে পানিতে ডুবে সুবর্ণা আক্তার নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী মারা গেছেন। ঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় তিনি তাড়াহুড়ো করে বের হতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে পানিতে ডুবে যান। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও লুৎফুর রহমান ও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বানের পানিতে ইতোমধ্যে ১০টির মতো গ্রাম ডুবে গেছে। পানির তোড়ে একটি অস্থায়ী সেতু ভেঙে আখাউড়া-আগরতলা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত থেকে আখাউড়ায় ভারী বর্ষণ শুরু হয়। সকাল থেকে বন্দরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খাল দিয়ে ভারত থেকে তীব্র বেগে পানি ঢুকতে থাকে। একপর্যায়ে স্থলবন্দর, বাউতলা, বীরচন্দ্রপুর, কালিকাপুর, বঙ্গেরচর, সাহেবনগরসহ অন্তত ১০টি গ্রামে পানি প্রবেশ করে। ভেঙে যায় গাজীরবাজার এলাকার অস্থায়ী সেতু।
বিজ্ঞাপন
এর আগে মঙ্গলবার খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। সঙ্গে ছিলেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস কুমার চক্রবর্তী।

দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন জানান, সকালে তীব্র বেগে ভারতীয় পানি ঢুকতে থাকে। এতে কয়েকটি গ্রামে পানি উঠার পাশাপাশি আখাউড়া-আগরতলা সড়কের অস্থায়ী সেতু ভেঙে যায়। পুরো বন্দর এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
ইউএনও গাজালা পারভীন জানান, বেশ কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এলাকাবাসী মিলে বাঁধের অংশ মেরামত করেছেন। সেতুটি মেরামতের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগকে খবর দেওয়া হয়েছে। দ্রুত যান চলাচলের উপযোগী করা যাবে না।
প্রতিনিধি/এজে/এমআর

