শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীর বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত   

জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী 
প্রকাশিত: ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৯:০৪ এএম

শেয়ার করুন:

টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীর বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত   

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীর বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ৯টি উপজেলার সবকটিতেই বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। এতে লোকজনের মধ্যে বন্যার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। 

এ ঘটনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক। এদিকে খাল উদ্ধার ও পানি নিষ্কাশনে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চান স্থানীয়রা।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধস, যান চলাচল বন্ধ

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টানা এক সপ্তাহের ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে পুরো নোয়াখালী জেলাজুড়ে। জেলার সদর, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর উপজেলার বেশিরভাগ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন এসব উপজেলার বাসিন্দারা। বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে আমন ধানের বীজতলা, শাক-সবজি। এছাড়া মাঠে পানি বেশি থাকায় অনেক এলাকার কৃষক খেতে আমন লাগাতে পারছেন না। জলাবদ্ধতায় আটকে আছে ২০ লাখ মানুষ। ডুবে গেছে সড়ক, বাসাবাড়িতেও ঢুকছে পানি। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় দ্রুতই জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান পানিবন্দী মানুষজন।

নোয়াখালীর পানিবন্দী মানুষ খাল উদ্ধার ও পানি নিষ্কাশনে সহযোগিতা চেয়েছেন। জেলার সদর, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর উপজেলার বেশিরভাগ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন এসব উপজেলার বাসিন্দারা। 

আরও পড়ুন: মাদারীপুরে বাজার মনিটরিং করলো শিক্ষার্থীরা


বিজ্ঞাপন


আবহাওয়া অফিস বলছে, সোমবার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দিনেও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। 

জেলার সদর উপজেলার পশ্চিম চর উরিয়ার বাসিন্দা রেজাউল হক বলেন, টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে বাড়ির চারপাশে পানি ওঠে গেছে। ডুবে গেছে চলাচলের রাস্তা। 

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা সাহাব উদ্দিন বলেন, রাস্তাঘাট ডুবে এখন মানুষের বসতঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। মাছের ঘেরসহ সব ভেসে গেছে। 

কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দা রুবেল বলেন, হাঁটুপানি দিয়ে আমাদের চলাফেরা করতে হচ্ছে। খাল উদ্ধার ও পানি নিষ্কাশনে সহযোগিতা চাই।

এদিকে টানা বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, নোয়াখালীর সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পানি নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য উপজেলা পর্যায়ের সব মাধ্যমিক, প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান ও মাদরাসাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের বলা হয়েছে। 
 
নোয়াখালীর আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। সোমবার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দিনেও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। যেহেতু সতর্ক সংকেত চলছে আমরা জেলেদের তীরবর্তী স্থানে থাকতে বলেছি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সাল বলেন, নোয়াখালীতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। যা বিগত ২০ বছরেও হয়নি। এছাড়া জোয়ার থাকায় পানি নামতে পারছে না। আমরা জলাবদ্ধতা প্রতিরোধে শহর ও তার আশপাশে ১৬১ কিলোমিটার খাল খনন করেছি। এতে করে সব উপজেলায় পানি নিষ্কাশন হওয়ার কথা। তাছাড়া পুরোপুরি জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে ড্রেন ও নালা রক্ষণাবেক্ষণ করা প্রয়োজন।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, সবার সহযোগিতায় আমরা জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন অবৈধ বাঁধ কেটে পানি চলাচল স্বাভাবিক করার কাজ শুরু হয়েছে। বৃষ্টিপাত কমে গেলে পানিও কমে যাবে। 

 প্রতিনিধি/ এমইউ 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর