ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার অষ্টশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের মামলায় দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার (২২ মে) ভোর রাতে সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে তাদের বাড়ি থেকে ঐ দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয় বলে ঢাকা মেইলকে জানান ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম। দুপুরে আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত দুলাল ও সাজুকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতার হওয়া দুই যুবক হলেন- সদরের রায়পুর ইউনিয়নের ফুটানি বাজার এলাকার সোলেমান আলীর ছেলে দুলাল (৩০) ও একই ইউনিয়নের চুনিহারি গ্রামের ফয়জুল ইসলামের ছেলে মাসুদ ওরফে সাজু (৩২)।
এ ঘটনায় গত শনিবার (২১ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ওই ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
আসামিরা হলেন- দুলাল (৩০), সাজু (৩২), মোহাম্মদ দুলাল (৩৫), আলমগীর হোসনে (৪০), হাফিজুর ইসলাম (৪৫) ও খকেন (৫০)। পরে ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার করার জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বরাতে ওসি তানভিরুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, বাদির মেয়ে প্রাইভেট ও বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সময় প্রায় তার পথরোধ করে উত্ত্যক্ত করাসহ কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল দুলাল। দুলালের প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে ঐ স্কুলছাত্রী তার মত করে নিয়মিতভাবেই প্রাইভেট ও বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতো। গত সোমবার (১৬ মে) সকাল ১০টার দিকে ঐ স্কুলছাত্রী বিদ্যালয় থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথে দুলাল ও তার সহযোগি অটোচার্জার চালক সাজু ঐ স্কুলছাত্রীর পথরোধ করে। এরপর তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ভাবে অটোচার্জারে করে অপহরণ করে সদরের রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ট্রাক ট্যাংলরি অফিসে নিয়ে যায় তারা। এরপর সেখানে ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে দুলাল।
বিজ্ঞাপন
এসময় মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে দুলারের সহযোগি মামলার ২ নম্বর আসামি সাজু, ৩ নম্বর আসামি মোহাম্মদ দুলাল ও ৪ নম্বর আসামী আলমগীর হোসেন। পরে তাঁরা ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা কারও কাছে প্রকাশ না করার জন্য বলে এবং প্রকাশ করলে ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেয়।
পরে স্কুলছাত্রীকে ওই ট্রাক ট্যাংলরী অফিসের বাহিরে ফেলে রেখে দুলাল ও তার সহযোগিরা পালিয়ে যায়। এসময় ঐ ছাত্রী কান্নাকাটি শুরু করলে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরে স্কুলছাত্রী তার পরিবারের কাছে ধর্ষণের শিকার হওয়ায় ঘটনাটি জানায়।
ওসি আরও বলেন, ‘স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে আপোষ-মিমাংশার চেষ্টা করছিল মামলার ৫ নম্বর আসামি হাফিজুর রহমান ও ৬ নম্বর আসামি খকেন। সেই সাথে মামলার আলামত নষ্টের চেষ্টা করছিল তারা। মামলা হওয়ার পরপরই আমরা অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে দুলাল ও তার এক সহযোগি সাজুকে গ্রেফতার করা হয়। তবে ধর্ষণের ভিডিও এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ধর্ষণের ভিডিও উদ্ধার ও বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এজে