শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব, দুই শিক্ষককে শোকজ

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২২ মে ২০২২, ০৬:৪৬ পিএম

শেয়ার করুন:

ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব, দুই শিক্ষককে শোকজ
ছবি : ঢাকা মেইল

পাবনার সাঁথিয়া পৌরসভা এলাকার সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার দেবনাথ ও সহকারী শিক্ষক বাবুল পালকে শোকজ করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করতে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

রোববার (২২ মে) বিকেলে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এসএম জামাল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 


বিজ্ঞাপন


সাঁথিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মনিরুজ্জামানকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বিশ্বাস, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন, মৎস্য কর্মকর্তা খাদেমুল ইসলাম, ইনসট্রাক্টর ইউআরসি হাফিজুর রহমান। 

তদন্ত কমিটির প্রধান মো. মনিরুজ্জামান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক ও সহকারী এক শিক্ষকের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছে। শিক্ষার্থীদের দাবি প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কুরুচিপূর্ণ ও অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছে। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিচার চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে আমাকে প্রধান করে একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমি এখনও  চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে তদন্ত টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীসহ দুই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করে রিপোর্ট তৈরি করা হবে।

বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম জামাল আহমেদ বলেন, আগামী তিন দিবসের মধ্যে দুইজন শিক্ষককে শোকজ করে বিষয়টি জবাব দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে রিপোর্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ঘটনাসূত্রে  জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী সাঁথিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে কয়েকদিন আগে বহিরাগত বখাটে ছেলেরা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে ছাত্রীদের ইভটিজিং করে। ছাত্ররা প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের মারধর করে। কয়েকদিন আগে আলামিন নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে জামা ছিঁড়ে দেয় বহিরাগতরা। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষককে জানালে তিনি তার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো ছাত্রদের গালমন্দ করে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। বিষয়টি নিয়ে গত বুধবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করতে পাঠান। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাদের সরেজমিনে ওই বিদ্যালয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে কুরুচিপূর্ণ ও অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী নিজেই এবং এর বিচার চান। 
ওই শিক্ষার্থী বলে, 'প্রধান শিক্ষক স্যার আমার বডির সাইজ কত সেটি জানাসহ নানা ধরনের অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। সেটি প্রত্যাখান করায় আমার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত ছিল। প্রায় আমাকে একা ডেকে এসব বাজে কথা বলত। আমি লজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলিনি।' 


বিজ্ঞাপন


সর্বশেষ গত ১৬ মে স্কুল ছুটি হওয়ার পর দশম শ্রেনির ওই ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার দেবনাথ ও সহকারী শিক্ষক বাবুল পালের শাস্তি চেয়ে তাদের  বিরুদ্ধে গত ১৭ মে মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরও কোন বিচার বা তদন্ত কমিটি না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা  গত বৃহস্পতিবার-শনিবার সকাল ১১ টায় ওই দুই শিক্ষকের অপসারণ ও বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে। এ সময় সাঁথিয়া উপজেলা সড়ক অবরোধ করে রাখে ছাত্র -ছাত্রীরা। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ঘটনাটি সুষ্ঠ তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবরোধ প্রত্যাহার করে। 

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর